গাংনীর রবিউল মেমোররিয়াল হাসপাতালে প্রসুতি মৃত্যুর ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন
এম এ লিংকন,মেহেরপুর প্রতিনিধি
গত শুক্রবার মেহেরপুরের গাংনীর রবিউল মেমোরিয়াল হাসপাতালে প্রসুতি মৃত্যুর ঘটনায় ডাঃ বিপুল কুমার (গাইনী বিশেষজ্ঞ), মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের এম ও সি এস ডাঃ ফয়সাল কবির ও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফরিদ উদ্দিন সাধিনকে নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির সদস্য গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফরিদ উদ্দিন সাধিন। জানা যায়, জুলাই মাসের ২৭ তারিখ শুক্রবার এ উপজেলার ভবানিপুর গ্রামের বাবুল হোসেন তার স্ত্রী শুকজানকে সন্তান প্রসবের জন্য রবিউল মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রসুতিকে সিজার করা হয়।
প্রসুতিকে সিজার করার পর সে মারা যায় বলে জানান গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আর এম ও ডাঃ এম কে রেজা। তিনি জানান, রবিউল মেমোরিয়াল হাসপাতালের পরিচালক মোঃ তরিকুল ইসলাম নিজেই প্রসুতির অপারেশন করেন। তার ভুল অপারশনের কারণে প্রসুতি শুকজানের মৃত্যু হয়।
তবে এ বিষয়টি জানতে চাইলে তরিকুল ইসলাম অস্বীকার করে প্রথমে বলেন ডাঃ বিডি দাস পিকলু ও ডাঃ এম কে রেজা অপারেশন করেছেন। পরে তরিকুল ইসলাম ডাঃ এম কে রেজাকেই দায়ী করেন তিনি দাবি করেন ডাঃ এম কে রেজা অপারেশন করেছেন। এদিকে ডাঃ এম কে রেজার সাথে আবারো জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমাকে ফোনে জরুরী ভাবে সেখানে যেতে বলা হয় আমি গিয়ে দেখি অপারেশন টেবিলে একটি রোগী যার অপারেশন করা হয়ে গেছে।
ডাঃ বিডি দাস পিকলুর সাথে জানতে চাইলে তিনি বলেন তরিকুল ইসলাম আমাকে জরুরী ভাবে তার হাসপাতালে যেতে বললে আমি গিয়ে দেখি প্রসুতির অপারেশন করা হয়ে গেছে, সে মুহুর্তে আমার কিছুই করার ছিল না কারণ প্রসুতির অক্সিজেন নেমে গেছে। তার পরও প্রসুতিকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করেছি। পরে তাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কুষ্টিয়া রেফার্ড করেন।
এ দিকে ডাঃ এম কে রেজা সাংবাদিকদের জানান, প্রসুতি শুকজান অপারেশন রুমেই মারা গিয়েছিল। রোগী মারার যাওয়ার পর তাকে আবার রেফার্ড করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন রোগীর স্বজনদের শান্তনা দেওয়ার জন্য তাকে রেফার্ড করা হয়েছে। ডাঃ এম কে রেজা আরো জানান,বিষয়টিকে ধামা চাপা দেওয়ার জন্য প্রসুতির স্বজন ও একটি মহলকে টাকা দেন হাসপাতালের পরিচালক তরিকুল ইসলাম।
এদিকে প্রসুতি শুকজানের পিতা একই উপজেলার রামদেবপুর গ্রামের আঃ মান্নান ঝামেলা মনে করে বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও প্রসুতির মা জামিরন নেছা মেয়ের মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করেন। তার মেয়েকে মেরে ফেলেছে বলে আহাজারি করেন ও সাংবাদিকদের তার মেয়ের ছবি দেখিয়ে প্রসুতির মা বলেন আমার মেয়ের কোন হার্টের রোগ ছিলনা।
এখন ডাক্তাররা বলছে আমার মেয়ে হার্টের জন্য মারা গেছে। এদিকে হাসপাতালের পরিচালক তরিকুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে প্রসুতির হার্ট এর সমস্যা ছিল বলে দাবি করেন। এদিকে এলাকার অনেকে জানান রবিউল মেমোরিয়াল হাসপাতালে এর আগেও ভুল চিকিৎসা হয়েছে। তাই এলাকাবাসি রবিউল মেমোরিয়াল হাসপাতালটি বন্ধ রাখার দাবি করেছেন এবং দৃষ্টান্ত মুলোক শাস্তি দাবি করেছেন।