শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণের পরিমাণ দ্বিগুণ করে বাংলাদেশ শ্রম আইনের খসড়া অনুমোদন
সোমবার (০৩ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।
তিনি বলেন, আগের আইনে শ্রমিকের মৃত্যুতে ১ লাখ টাকা এবং কর্মরত অবস্থায় স্থায়ীভাবে পঙ্গু হলে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের বিধান ছিল। নতুন প্রস্তাবনায় তা দ্বিগুণ করা হয়েছে। এছাড়া ট্রেড ইউনিয়ন করার জন্য ন্যূনতম সদস্যদের সম্মতি ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া বেআইনি ধর্মঘট ডাকলে ছয় মাসের জেল ও ৫ হাজার টাকার জরিমানার বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। কারখানায় শিশু শ্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে।
মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিকের কাজের সময় এমনভাবে ব্যবস্থা করতে হবে যেন আহার ও বিশ্রামের বিরতি ছাড়া ১০ ঘণ্টার বেশি না হয়। তবে সরকার ব্যতিক্রম করলে পরিবর্তন করা যাবে।
উৎসব ছুটি নিয়ে বলা হয়েছে, কোনো শ্রমিককে উৎসবের দিনে কাজ করাতে পারবে। তবে এর জন্য তাকে এক দিনের বিকল্প ছুটি এবং দুই দিনের ক্ষতিপূরণমূলক মজুরি দিতে হবে। শ্রমিকরা ইচ্ছা করলে যৌথ দর কষাকষির মাধ্যমে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কাজ করে পরবর্তীতে সাপ্তাহিক ছুটি উৎসব ছুটির সঙ্গে ভোগ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে সাপ্তাহিক ছুটির দিনের কাজের জন্য ভাতা প্রদান করা হবে না।
প্রতিবন্ধী শ্রমিকদের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রতিবন্ধী শ্রমিকদের বিপজ্জনক যন্ত্রপাতির কাজে বা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োগ করা যাবে না। আগে শিশু শ্রমিককে বিপজ্জনক কাজে শর্ত সাপেক্ষে নিয়োগ করার বিধান ছিল। সেটাকে সংশোধন করে প্রতিবন্ধী শ্রমিকের কথা বলা হয়েছে।
নারী শ্রমিকদের ব্যাপারে নতুন ধারা যুক্ত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো মহিলা শ্রমিক সন্তান প্রসবের প্রমাণ পেশ করার পরবর্তী তিন কর্ম দিবসের মধ্যে উক্ত সময়ের জন্য প্রদেয় প্রসূতি কল্যাণ সুবিধাসহ প্রসব পরবর্তী ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত অনুপস্থিত থাকার অনুমতি পাবেন। অর্থাৎ মাতৃকালীন ছুটির মতো সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।
কোনো মালিক কোনো মহিলাকে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করলে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
বৈঠকে এর বাইরে প্রধানমন্ত্রীর বিমসটেক সম্মেলনের বিষয়ে আলোচনা হয়।