লালমনিরহাটে নানা জাতের ফুল চাষ করে আঃ রশীদ রুপন স্বাবলম্বী

মোঃ মামুনুর রশিদ (মিঠু), লালমনিরহাট

লালমািনরহাটে নানা জাতের বাহারী ফুল চাষ করে শিক্ষিত-অশিক্ষিত বেকার যুবকদের নিয়ে রুপন ফুল বিতানের মালিক মো: আব্দুর রশীদ রুপন এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। জেলার মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় ৯০% লোক শিক্ষিত।

প্রতি বছর এ জেলায় বেকার যুবকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। লালমনিরহাট পৌরসভা ও পাটগ্রাম পৌরসভা ছাড়াও প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি হওয়ায় কর্মসংস্থানের অভাবে অনেক শিক্ষিত যুবকই ঢাকায় পাড়ি জমায়েছে। কেউ বা ভিটে বাড়ী বিক্রি করে বিদেশ যাওয়ার আকাঙ্খায় আদম ব্যাপারিদের হাতে অর্থ খোয়া দিয়ে নিঃস্ব হয়েছে।

কেউ বা অর্থের জন্য রিক্সা, ভ্যান গাড়ী চালাতে দ্বিধা করত না। বিগত কয়েকবছর যাবত দেশব্যপী ফুল চাষ বিস্তার লাভ করলে এর ছোয়া লাগে লালমনিরহাটে। রুপন ফুল বিতানের মালিক মোঃ আব্দুর রশীদ রুপন এ প্রতিবেদককে জানান লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের জেলখানা রোডস্থ তেলিপাড়া মৌজায় ৩০ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে প্রায় ১ লক্ষ টাকা খরচ করে গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা, গ্লাডিওলাস, গোলাপ, জারবারা, ক্যারেন্ডুলা, স্টার, সূর্যমুখী (হাইব্রিড), বল, কামিনী পাতাসহ নানা জাতের বাহারি ফুল নিজে চাষ করে। শহরের মিশন মোড় এলাকায় ফুলের দোকান দিয়ে খুচরা ও পাইকারি ভাবে ফুল বাজারজাত করছেন। তিনি জানান, প্রায় ১ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।

বর্তমান ফুলের বাম্পার ফলন হওয়ায় তার চোখে মুখে আনন্দ আর উল্লাস। তার এ ফুল বাগান থেকে ২ লক্ষাধিক টাকা আয় হবে বলে তিনি আশাবাদী। ফুল বাগানে এবং বিক্রয় কেন্দ্রে কয়েকজন যুবক কাজ করে। তাদের যেমন প্রতিদিন ৩০০ টাকা হারে মজুরী প্রদান করছেন তেমনটা সমাজ থেকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত করছেন। তিনি নিজে এবং বেকার কয়েকজন যুবককে নিয়ে অন্যের উপর নির্ভরশীল না থেকে তিনি একজন সফল ফুলচাষী ও ফুল ব্যবসায়ী হিসেবে গর্ববোধ করেছেন। তার মতে, ফুল চাষ ও ব্যবসা লাভজনক। অন্যকেউ চাষ বা ব্যবসায়ী হতে চাইলে তাদেরকে পরামর্শ দিতে অতি সরলমনা এ যুবকটি অনেকটা স্বাচ্ছ্যন্দে এ প্রতিবেদককে ফুল বিষয়ে তথ্য দিয়ে বেকার যুবকদের বসে না থেকে অল্প পুঁজিতে ফুল চাষের আহ্বান জানান। তিনি ফুল চাষ ও ব্যবসা করে স্বাবলম্বী দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে তিনি এ ব্যবসার সাথে জড়িত।

তার মতে কেউ পরামর্শ চাইলে ০১৭২২-৩৯৯৬২৯ নম্বরে যোগাযোগ করলে তিনি সার্বিক সহযোগিতা করবেন। তার উৎপাদিত ফুল লালমনিরহাট জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলাগুলোতেও সরবরাহ করছেন বলে তিনি জানান। যেসব জমিতে শাক-সবজি চাষ করা হয় সেসব জমি হলো ফুল চাষের উপযোগী, এতে শুধু গোবর বা জৈব সার এবং পানি ব্যবহার করা হয়। আর মাঝে-মধ্যে কীটনাশক দিয়ে স্প্রে করতে হয়। তবে শীত মৌসুমে ফুল চাষ শুরু হয় নভেম্বর মাসে। আর খরা মৌসুমে ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহ ফুল চাষের জন্য উপযুক্ত সময়।