উল্লাপাড়ায় বাকানি রোগে ইরি ধান চারায় দেখা দিয়েছে ক্ষতি কৃষকদের অভিযোগ সাবেরের ধান বীজে
সাহারুল হক সাচ্চু, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় বিভিন্ন আবাদী মাঠে ইরি ধান চারায় ক্ষতি দেখা দিয়েছে। জমিতে লাগানো ইরি ধান চারা মরে যাচ্ছে। কয়ড়া ইউনিয়নের চরপাড়া মাঠে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি দেখা দিয়েছে বলে জানা যায়।
বীজ বিক্রিতা সাবের হোসেনের কাছ থেকে কেনা ইরি ধান বীজ চারায় এ অবস্থা দেখা দিয়েছে বলে কৃষকেরা জানান। স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে বিষয়টি জেনে চরপাড়া মাঠে গিয়ে এটি বীজ বাহিত বাকানি রোগ বলে ক্ষতি ঠেকাতে কৃষকদেরকে বিভিন্ন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। উপজেলার আরো ক’টি এলাকায় এমন ক্ষতি ও একই পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়।
সরেজমিনে চরপাড়া মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, বেশ ক’জন কৃষকের জমিতে ধান চারা মরে গেছে। এসবই ব্রি-২৯ জাতের ধান বলে কৃৃষকরা জানান। কৃষকদের মধ্যে তফের মিয়া জানান, গত ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ আগে তারা জমিতে চারা লাগিয়েছেন।
গত সপ্তাহ খানেক সময়ে চারা গুছি থেকে প্রথমে এক দু’টি চারা অস্¦াভাবিক ভাবে বেড়ে ওঠে। এরপর গোটা ধান গুছি মরে যাচ্ছে। কৃষকরা জানান, চরপাড়া গ্রামেরই বীজ বিক্রিতা সাবের হোসেনের কাছ থেকে ইরি ধান বীজ কিনে তৈরি চারা জমিতে লাগিয়েছেন।
খোজ নিয়ে আরো জানা যায়, সাবের হোসেনের কাছ থেকে কেনা ধান বীজের চারা জমিতে লাগিয়েছেন তদ্দরই এমন ক্ষতি দেখা দিচ্ছে। জানা গেছে, চরপাড়া গ্রামের সাবের হোসেন বেশ ক’বছর ধরে বিভিন্ন ফসলের বীজের ব্যবসা করছে। তার সরকারী নিবন্ধন রয়েছে বলে জানা যায়। তিনি নিজে বীজ উৎপাদন করে মুক্তা বীজ ভান্ডার নামে প্যাকেট জাত করে সরাসরি কৃষক ও বিভিন্ন বীজ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে থাকেন।
সংশ্লিষ্ট জঙ্গলাখামার কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সদরুল আলম জানান, গত তিন পাঁচেক আগে বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি ক্ষতির বিষয় জেনেছেন। তিনিও জানান, চরপাড়া মাঠে সাবের হোসেনের কাছ থেকে কেনা ধান বীজের চারায় এ ক্ষতি দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে চরপাড়া গ্রামের কৃষক মজিবর রহমানের তিন বিঘা, গিয়াস উদ্দিনের এক বিঘা, তফের মিয়ার আড়াই বিঘা, মকদুমের দুই বিঘা, মমিনের দুই বিঘা, আমজাদের এক বিঘা ইরি ধান জমিতে তিনি এ ক্ষতি দেখতে পেয়েছেন বলে জানান। এ ক্ষতি ঠেকাতে কৃষকদেরকে অনুমোদিত মাত্রায় থিয়োভিট ও পটাশ জমির উপরি ভাগে ছিটানো এবং জমির পানি শুন্য রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কৃষি অফিস থেকে জানা যায়, উপজেলার বোয়ালিয়া, সলপ, চৌবিলা, অলিদহ এলাকায় এ বাকানো রোগ দেখা দিয়েছে।
বীজ বিক্রিতা সাবের হোসেন জানান, তিনি সব নিয়ম পদ্ধতি মতেই বীজ উৎপাদন ও তা বাজারজাত করে থাকেন। বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের কাছে এবং উল্লাপাড়া শহরের দুটি বীজ দোকানে এ ইরি ধানের বীজ বিক্রি করেছেন। তিনি ক্ষতির বিষয়ে জেনে কৃষকদেরকে ঔষধ সামগ্রী কেনার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করছেন বলে জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খিজির হোসেন প্রামানিক জানান, তার বিভাগের উপ-সহকারী কর্মকর্তাগণ নিজ নিজ ব্লকের মাঠে এ বিষয়ে ভাল ভাবে খোজ নেয়া এবং কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি নিজেও সরেজমিনে মাঠ পরিদর্শন ও কৃষকদের এ বিষয়ে পরামর্শ দেয়ার বিষয়ে জানান।