অনিয়ম-দুর্নীতি ও লোকসান বাংলাদেশ বিমানের টিকেটে ১০০% ছাড়!
এমনিতে আর্থিক সংকটের মুখে আছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। অনিয়ম-দুর্নীতি ও লোকসান দেওয়ার জন্য বহুল আলোচিত এই প্রতিষ্ঠান গত ১০ বছরে নিজেদের কর্মীদের বিনা মূল্যে ও নামমাত্র মূল্যে প্রায় ৪৮ হাজার টিকিট দিয়েছে। এসব টিকিটের অনুমিত মূল্য অন্তত ৭০ কোটি টাকা। এ হিসাবে বছরে প্রায় ৭ কোটি টাকার টিকিট নিচ্ছেন বিমানকর্মীরা। ঢালাওভাবে টিকিট দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির কাছে গত ১০ বছরে বিমান তার কর্মীদের কত টিকিট দিয়েছে, তার হিসাব তলব করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত রোববার কমিটির বৈঠকে বিমান একটি হিসাব জমা দেয়। তাতে দেখা গেছে, সংস্থাটির বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত অন্তত ৪৭ হাজার ৮৪৫টি টিকিট নিয়েছেন। ৮৫ থেকে ১০০ শতাংশ ছাড়ে তাঁদের এসব টিকিট দেওয়া হয়। কর্মীরা নিজের বা স্বামী–স্ত্রী, পিতা–মাতা ও সন্তানদের নামে এসব টিকিট নিয়েছেন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চাহিদা মোতাবেক বিমান সংস্থা থেকে সরবরাহকৃত এক রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। বিপুল পরিমাণ টিকেট এভাবে দেয়ায় প্রশ্ন তুলেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিমানকর্মীদের নেয়া ৪৮ হাজার টিকেটই দেয়া হয়েছে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টিকেট নিয়েছেন প্রকৌশল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট শাখার কর্মীরা। এই শাখার ৫৫১ জন কর্মী নিয়েছেন ১০ হাজার ৮৪৮টি টিকেট।
এ বিষয়ে বিমানের উপমহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার সংবাদমাধ্যমকে একটি লিখিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেখানে বলা হয়েছে, বিমানের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা বিভিন্ন রেয়াতি টিকেট প্রাপ্য হন। অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে একেকজন (নির্ভরশীলসহ) বছরে সর্বোচ্চ ২০টি টিকেট প্রাপ্য হন ৮৫ থেকে ১০০ শতাংশ রেয়াতি হারে।