নকলায় নিকাহ রেজিষ্টারদের দুর্নীতির কারণে বাল্যবিবাহ বন্ধ হচ্ছে না
হারুনুর রশিদ, শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুরের নকলা উপজেলায় কতিপয় অবৈধ অর্থলোভী নিকাহ রেজিষ্ট্রারের দুর্নীতির কারণে বাল্য বিবাহ বন্ধ হচ্ছে না। ১৮ ও ২১ বছরের কম বয়সী ছেলেমেয়েদের বিবাহ রেজিষ্ট্রি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকলেও তারা ভূঁয়া কাবিন নামায় বয়স বাড়িয়ে বিবাহ রেজিষ্ট্রি দেখিয়ে প্রচুর টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারণা করছেন। বিবাহ রেজিষ্ট্রির কোন প্রকার রশিদ অথবা নকল সরবরাহ না করে এই প্রতারণা করে যাচ্ছেন। এ ধরনের বহু ঘটনার মধ্যে একটি ঘটনা সরেজমিনে অনুসন্ধান করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা যায়, নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বন্দটেকি গ্রামের আজিজুল হকের মেয়ে চন্দ্রকোনা রাজল²ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী চাদনী আক্তার (১৩) কে ফুসলিয়ে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে গত ১০মার্চ রাতে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়, বানেশ^রদী ইউনিয়নের পোলাদেশী গ্রামের ছাইদুল ইসলামের ১০ম শ্রেণি পড়–য়া ছেলে শামীম মিয়া (১৪)।
মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি মেয়ের বাবা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাজু সাঈদ সিদ্দিকীকে জানালে তিনি মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্য বহু চেষ্টা করেও ব্যার্থ হয়ে মেয়ের পিতাকে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন। মেয়ের বাবাকে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী মামলা করতে না দিয়ে আপোষ মিমাংসার চেষ্টা করে কালক্ষেপন করে।
এই সুযোগে গত ১১ মার্চ ৫লক্ষ টাকা দেন মহর ধার্য্য করে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ১নং কাংসা ইউনিয়নের কাজির অফিসে (বহি নং ১, পৃষ্টা-৩৪), রেজিষ্ট্রি কাবিন মুলে শেরপুরের নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে গত ১২ই মার্চ বিবাহ নামা এফিডেভিট করেন। পরবর্তীতে উক্ত কাবিন নামায় বেশি মহরনা থাকায় পূণঃরায় নকলা পৌরসভার একটি কাজী অফিসে গত ১৪ই মার্চ দুই লাখ টাকার মহরানা দেখিয়ে আরেকটি এফিডেভিট করে একই নোটারী পাবলিকের এডভোকেট জমশেদ আলী মাধ্যমে।
এব্যাপরে সরেজমিনে অভিযোগের অনুসন্ধান কালে ছেলের মাতা জানান যে, নকলা পৌরসভার ৭,৮,৯নং ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিষ্টার আব্দুল হান্নানের বাড়িতে গিয়ে (যাহার বহি নং-২, পৃষ্টা নং-২৪) বিবাহ রেজিষ্ট্রি করা হয়েছে,কিন্তু কাবিন নামার কোন রশিদ বা নকল সরবরাহ করেন নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ ভূঁয়া কাগজ পত্রের মাধ্যমে বেশি বয়স দেখিয়ে কাজীকে প্রচুর টাকা দিয়ে ভূয়া কাবিন নামা রেজিষ্ট্রি দেখিয়ে নিকাহ রেজিষ্ট্রার প্রতারণা করেছেন।
এবিষয়ে নকলা পৌরসভার(৭,৮,৯নং ওয়ার্ড) নিকাহ রেজিষ্ট্রার আব্দুল হান্নানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বিবাহ রেজিষ্ট্রি করেননি বলে দাবী করেন।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন শাহকে ঘটনাটি জানালে তিনি জানান, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।