নোয়াখালীর হাতিয়ায় টিসিবি’র পণ্য অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রির অভিযোগ
নবীন, নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় দীর্ঘদিন পর হঠাৎ করে টিসিবি’র ডিলারের উপস্থিতি দেখে চমকে উঠেছে ভোক্তারা। তাও আবার তড়িগড়ি করে গুটি কয়েক ভোক্তার মাঝে সরকারী নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্যে মালামাল বিক্রি করে কিছুক্ষণ পরে বিক্রি বন্ধ করে দেয়।
জানাযায়, সরকার বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসের মহামারীর মধ্যে কর্মহীন জনগণের জন্য সারাদেশে ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় হাতিয়া উপজেলায় সীমিত আকারে কেবল হাতিয়া বাজারে মেসার্স আসিফা কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার ২ মে.টন চিনি ও ৩ মে.টন সয়াবিন তৈল বিক্রি করেছেন। প্রথম দিন লোকজন রিলিফ ভেবে বেশ ভীড় জমায়, মঙ্গলবার লোকজনের তেমন উপস্থিতি ছিল না। সরকার নির্ধারিত মূল্য চিনি প্রতি কেজি ৫০ টাকা হলেও বিক্রি করা হয়েছে ৫২ টাকায়, সয়াবিন তৈল সরকার নির্ধারিত মূল্য প্রতি কেজি ৮০ টাকা হলেও বিক্রি করা হয়েছে ৮২ টাকায়। পবিত্র রমজানে ছোলা ও মশুর ডাল খুবই প্রয়োজনীয় হলেও তা বিক্রি করা হয় নি। এমন অভিযোগ স্থানীয় ভোক্তাদের।
মেসার্স আসিফা কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশনের মালিক তমরুদ্দির বিএনপি নেতা আব্দুল মতিন। তিনি হাতিয়া বাজারে থাকেন না, তিনি থাকেন জেলা শহরে। তার পক্ষে হাতিয়া বাজারের স্থানীয় বিক্রেতা বেলাল জানায়, সরকারীভাবে যা দেওয়া হয়েছে তাই বিক্রি করা হয়েছে। ২ টাকা বেশি মূল্য নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।
অপর দিকে হাতিয়ায় তালুক এন্টারপ্রাইজ নামে আরো একজন টিসিবির ডিলার ছিলেন। এটির মালিক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়া উল হক তালুক মিয়ার ছেলে বখতিয়ার উদ্দিন। বখতিয়ারের মৃত্যুর পর ডিলারশীপ সারেন্ডার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিসেস বখতিয়ার।
তিনি জানান, আমার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় কখনো সরকারী মালামাল উত্তোলন করেন নি। টিসিবর নির্ধারিত মূল্য আর বাজার মূল্যের মধ্যে তেমন প্রর্থক্য না থাকায় ও পরিবহন খরচসহ লাভের পরিবর্তে লস হতো। তাই উত্তোলন করা হতো না।
সরেজমিনে খবর নিয়ে জানা যায়, গত দশ বছর থেকে হাতিয়ায় তালুক এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স আসিফা কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন নামে এ দুইটি প্রতিষ্ঠান টিসিবি থেকে ডিলারশীপ নিয়ে জনগণের মধ্যে ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি করার কথা । অথচ একদিনও তাদের কোন কর্মকান্ড ভোক্তাদের নজরে পড়ে নি। এমন কী পিঁয়াজ যখন প্রতি কেজি ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, তখনও এদের দেখা মেলে নি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম জানান, হাতিয়ায় ২টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টিসিবি’র ডিলার হিসেবে আছে বলে জেনেছি। তারমধ্যে একজন ডিলার মারা গেছেন। অন্যটি মেসার্স আসিফা কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন। তারা হাতিয়া বাজার এলাকায় সরকারী নির্ধারিত মূল্যে পণ্য বিক্রি করার কথা। পন্য বিক্রিতে যদি তাদের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে সরোজমিনে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।