এবার ভারতকে পানি দেয়া বন্ধ করল ভুটান
ভারতের সবাই যখন সামান্তে চীনা বাহিনীর হাতে ২০ জনের বেশি ভারতীয় সেনা নিহত হওয়া ও ভারতের প্রতি নেপালের আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে আলোচনায় মশগুল তখন আরেক প্রতিবেশী ভুটান ভারতের আসাম রাজ্যের বাকসা জেলার কৃষকদের সেচের পানি আটকে দিয়েছে।
জেলার ২৬টি রাজস্ব গ্রামের প্রায় ৬,০০০ কৃষক তাদের ধান ক্ষেত্রে সেচ দেয়ার জন্য ভুটানের কৃত্রিম নালা নালা, যেগুলোকে স্থানীয় ভাষায় দং বলা হয়, এর পানি ব্যবহার করে।
কিন্তু কয়েক দিন আগে কোন কারণ ছাড়াই ভুটান এই পানি বন্ধ করে দেয়। এতে জেলায় ভুটানের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
জি নিউজের প্রতিবেদনের ভাষ্য, ‘দুই প্রতিবেশী দেশের উৎপাতে অতিষ্ঠ ভারত। চীন ও নেপাল, দুই দেশই ভারতীয় সীমান্তে একের পর এক বেআইনি কাজ করে চলেছে। চীনের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতের ২০ জন সেনা প্রাণ হারিয়েছেন। ওদিকে বিহারের লাগোয়া সীমান্তে নেপাল পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন সাধারণ এক গ্রামবাসী। গুরুতর আহত হয়েছিলেন আরও তিনজন। চীন ও নেপালের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এবার উৎপাত করে চলেছে ভুটান। তবে চীন ও নেপালের সঙ্গে ভারতের বিবাদের মাঝে ভুটানের কাণ্ড তেমন একটা প্রকাশ পায়নি। কিন্তু আড়ালে-আবডালে তারাও এবার ভারতীয় চাষিদের জল দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, আসামের বাকসা জেলা দিয়ে প্রবাহিত চ্যানেলের মাধ্যমে ভারতীয় কৃষকরা চাষের জন্য পানি পেতেন। কৃত্রিমভাবে তৈরি করা হয়েছিল ওই সেচ চ্যানেল। স্থানীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ডং। আসামের বাকসা জেলার অন্তর্গত ২৬টি গ্রামের বহু কৃষক ওই চ্যানেলের পানির ওপর নির্ভরশীল। ১৯৫৩ সাল থেকে ওই চ্যানেল দিয়ে ভুটান থেকে পানি প্রবাহিত হয়ে আসছিল। স্থানীয় চাষিরা এই পানি চাষাবাদের কাজে ব্যবহার করেন।
এবার ভুটান হঠাৎ করেই ওই চ্যানেলের প্রবাহ আটকে দিয়েছে। ফলে মহাসমস্যায় পড়েছেন বাকসা জেলার ২৬টি গ্রামের চাষিরা। চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
ভুটান সরকার অবশ্য কোনও কারণ উল্লেখ করেনি। কেন চ্যানেলের পানি প্রবাহ বন্ধ করা হয়েছে তা নিয়ে কর্মকর্তাদেরও কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ইতোমধ্যেই ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে ভারতীয় চাষিদের। স্থানীয় কৃষকরা রাস্তায় নেমে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বাকসা জেলার প্রশাসন ইতোমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিষয়টি নিয়ে আবেদন করেছে। কালিপুর, বোগাজুলি ও কালানদী অঞ্চলের ডং বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সমিতির ব্যানারে জেলার কৃষকরা নিজেদের ক্ষোভ ও দাবির কথা তুলে ধরেছে।