রিজেন্টের মালিক সাহেদকে ধরতে অভিযানে র্যাব
প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেয়া ছিলো রিজেন্টের মালিক শাহেদের মূল কৌশল। বুধবার (০৮ জুলাই) দুপুরে ব্রিফিংয়ে র্যাব জানায়, রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালাতে গিয়ে তারা কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে অ্যানাকোন্ডা পেয়েছেন। পলাতক শাহেদসহ বাকি নয় আসামিকে খুঁজতে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক সারওয়ার বিন কাশেম।
এদিকে, সরেজমিনে দেখা গেছে অনিয়মের অভিযোগে এর আগে বন্ধ করে দেয়া বেশ কয়েকটি হাসপাতাল কয়েকমাসের মধ্যেই আবারো কার্যক্রম শুরু করে।
কোভিড রোগীদের পরীক্ষা না করে রেজাল্ট দেওয়াসহ নানা অপরাধে মঙ্গলবার (৭ জুলাই) বন্ধ করে দেওয়া হয় রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা শাখা।এর আগেও নানা সময় বিভিন্ন অপরাধে বন্ধ হয় বিভিন্ন হাসপাতাল। যার একটি মোহাম্মদপুরের রয়েল হাসপাতাল। ২০১৮ সালে এই হসপিটালে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালটি বন্ধ করে সিলগালা করে দেওয়া হয়।
কিন্তু বন্ধ হবার মাত্র ৩ মাসের মধ্যেই উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে আবার কাজ শুরু করে হাসপাতালটি। যদিও পরিবর্তন হয়নি হাসপাতালের পরিবেশ, চলছে আগের মতোই।
মোহাম্মদপুরের আরেকটি হাসপাতাল সেবিকা। মাত্র কয়েক মাস আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে অভিযান চালিয়ে নানা ধরনের অনিয়মের কারণে করা হয় জরিমানা।
বুধবার হাসপাতালটিতে গিয়ে দেখা যায়, ডায়াগনস্টিক সেন্টার না থাকলেও ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি। রিসেপশনে নেই কেউ। চিকিৎসক উপরে ঘুমিয়ে আছে। একজন নার্স আছে, সেই সব দেখাশোনা করছে। কিছুক্ষণ পর নেমে এলেন চিকিৎসক। স্বীকার করলেন অনিয়ম, তবে অস্বীকার মালিকের।
মালিকের পক্ষের একজন বলেন, ব্যাংকে টাকা জমা দেয়া ছিল। কিন্তু সময় মতো আমরা লাইন্সেস পাইনি। তবে ওই সময় আমাদের এক মাসের ডেট ওভার হয়েছিল।
মালিকের পক্ষের আরেকজন জন বলেন, যেহেতু আমার ডায়াগনষ্টিক নাই। তাই এটা আলাদা পার্ট। এটার লাইন্সেস ও আলাদা। সেক্ষেত্রে এর নামও আমরা পরিবর্তন করতেছি। র্যাব বলছে, হাসপাতালের অনিয়মে চলবে অভিযান। অনিয়ম করলে আনা হবে শাস্তির আওতায়।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালাতে গিয়ে আমরা কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে অ্যানাকোন্ডা পাই। এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার বাবদ তারা বিপুল অঙ্কের বিল করেছে। তা গ্রাহকদের দিতে বাধ্য করেছে। এখানে ১৭ জনকে আসামি করেছে, তারা কেউই ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকবে না। এছাড়া যারাই আইনের ঊর্ধ্বে যেতে চাইবে, তাদেরকে আইন আওতায় আনতে আমরা সক্ষম।
এদিকে রিজেন্ট হাসপাতালের তদন্ত করতে গিয়ে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে বলেও জানান তিনি।
র্যাব জানায়, সে যখনই যার সঙ্গে পরিচয় হয়েছে, তাকে কখনো আর্মির মেজর, কখনো কর্নেল পরিচয় দিয়েছে। এবং তার বিভিন্ন আইডি কার্ড, বিভিন্ন নামে আমরা পেয়েছি। সেই আইডি কার্ডেও তিনি প্রতারণা করেছেন, সেখানে লিখেছেন ভিন্ন ভিন্ন নাম। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অফিসের নাম করেও প্রতারণা করেছেন।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ৯ জনকে খুঁজছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।