দাম বৃদ্ধিতে রেকর্ড ছাড়িয়েছে চালের বাজার
দাম বৃদ্ধিতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে চালের বাজার। চিকন কিংবা মোটা গত কয়েকমাসে সব ধরনের চালের দামই বেড়েছে কয়েক দফা।
মিল মালিক, আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, চালের দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণ বাজারে ধানের সরবরাহ নেই। অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতীয় চালের আমদানি কমে যাওয়ার কারণেও চালের বাজারে খানিকটা অস্থিরতা। তবে আর দশ থেকে ১২ দিন পরই উঠবে নতুন বোরো ধান। তাতে দাম কমে আসবে বলে আশ্বাস ব্যবসায়ীদের।
নিত্যদিনের খাদ্যতালিকায় উচ্চ কিংবা নিম্নবিত্ত, দেশের প্রায় শতভাগ মানুষেরই ভরসা চাল। কৃষি নির্ভর বাংলাদেশে চালের উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ। তাই বেড়েছে স্বনির্ভরতাও। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে গত অর্থবছর দেশে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টন ধানের উৎপাদন হয়েছে। যা আগের বছরের চেয়ে আড়াই লাখ টন বেশি।
তবে বছর বছর এই উৎপাদন বাড়লেও মৌসুমের এই সময়টাই প্রতি বছরই চালের বাজারে দেখা দেয় অস্থিরতা। সপ্তাহে সপ্তাহে বাড়তে থাকে দাম। গত ৫ বছরের হিসাব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, মৌসুমের এ সময়ে শুধু মোটা চালের দাম ২৮ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৮ টাকা। আর বিভিন্ন মানের চিকন চাল ৪৩ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৫২ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর মালিটোলা থেকে বাবু বাজারে চাল কিনতে এসেছেন চাল ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান। এখান থেকে নিয়মিত চাল কিনলেও দরকষাকষিতে যেন হিসাব মিলছেনা। শেষ পর্যন্ত দামে মিললেও চাল কিনছেন পরিমাণে কম।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় এই পাইকারি চাল বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধানের সরবরাহ না থাকাই দাম বৃদ্ধির মূল কারণ। তবে আর দশ থেকে ১২ দিন পরই এ অস্থিরতা কাটবে বলে দাবি তাদের। কুষ্টিয়া, নওগাঁসহ একাধিক মিল মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ধান না থাকায় মিলে কোন রকম কাজ চলছেনা। অপেক্ষা করছেন বৈশাখের নতুন বোরো ধানের।
তবে এ বছর ভারতীয় চাল আমদানিতে শুল্ক নির্ধারণ করায় কমেছে চালের আমদানি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কোন চাল আমদানি হয়নি, আর বেসরকারিভাবে আমদানি হয়েছে মাত্র ৮৩ হাজার মেট্রিক টন।আগের বছর যা ছিল ২৫৫ হাজার মেট্রিক টন।বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাবেক এই মহাপরিচালক বলছেন, মৌসুমের এ সময় দাম বাড়াটা স্বাভাবিক হলেও এবছর আমদানির এই প্রভাব পড়েছে বাজারে।