গাংনীতে কৃষক আটকের প্রতিবাদে বিজিবির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ মিছিল-সড়ক অবরোধ
এম এ লিংকন,মেহেরপুর : মেহেরপুরের গাংনীতে ফেনসিডিল দিয়ে এক কৃষককে আটকের প্রতিবাদে বিজিবি সদস্যেরদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেছে এলাকাবাসি। এ সময় স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডারের প্রত্যাহার দাবী করা হয়।
আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সহড়াতলা বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা ওই গ্রামের এরশাদ আলী (৩৭) নামের এক কৃষককে ফেনসিডিল হাতে দিয়ে আটক করে। আটককৃত এরশাদ আলী সহড়াতলা গ্রামের নওয়াব আলীর ছেলে।
একজন কৃষককে অন্যায়ভাবে আটকের প্রতিবাদে সহড়াতলা এলাকাবাসি ওই ক্যাম্পের কমান্ডার হাবিলদার তসলিম উদ্দীনকে প্রত্যাহারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও আগুন জ¦ালিয়ে সড়ক অবরোধ করে।
স্থানীয়রা জানান, ঘটনার সময় এরশাদ আলী বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন একটি হোটেলে খাবার খাওয়ার জন্য প্রবেশ করে। এসময় সিভিল পোশাকে দুই জন বিজিবি সদস্য এরশাদ আলীকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে বিজিবির সদস্যরা একটি ফেনসিডিলের বোতল এরশাদ আলীর কোমরে গুজে দেয়। এ সময় ওই বোতলটি এরশাদ ছুড়ে ফেলে দিলে বিজিবি সদস্যরা এরশাদ আলীকে মারধর করে। পূনরায় ফেনসিডিলের বোতলটি কোমরে গুজে দিয়ে তাকে ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে আরো জানান, দুই দিন আগে শহিদুল ইসলাম নামের এক সাবেক সেনা সদস্য ও সামাদ নামের দুই ব্যক্তিকে নিজ জমিতে কাজ করার সময় আটক করে ওই বিজিবির সদস্যেরা থানায় দেয়।
স্থানীয়দের মাধ্যমের খবর পেয়ে সাংবাদিকরা সহড়াতলা ক্যাম্পে গেলে বিজিবি সদস্যরা তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং কোন তথ্য দিতে অস্বীকার করেন। পরে ফিরে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের নাম ঠিকানা মোবাইল নম্বর নেওয়ার জন্য সড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে পথরোধ করে।
সহড়াতলা বাজারের হোটেল মালিক ইলিয়াস আলী সাংবাদিকদের জানান, এরশাদ আলী তার হোটেলে নাস্তা করতে আসার এক মিনিটের মধ্যে সিভিল পোশাকে দুই জন বিজিবি সদস্য তাকে আটক করে নিয়ে যায়। এসময় বিজিবি সদস্যরা এরশাদের কোমরে ফেনসিডিলের বোতল গুজে দেয়।
ইলিয়াস আরো জানান, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বররা (ইউপি সদস্য) বিজিবি ক্যাম্পে ঢুকতে পারেন না। তারা ক্যাম্পে গিয়ে জনতার পক্ষে কোন কথা বলতে পারেননা।
শরিফুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, বিজিবি সদস্যরা বেশ কিছু দিন ধরে রাতে অনুমতি ছাড়াই বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে তল্লাশির নামে অশালীন আচরণ করে।
মোজাম্মেল হক নামের স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, কয়েকদিন আমার ছেলে মনিরুজ্জামান বাবু নিজের মরিচের জমিতে কাজ করছিল। বিজিবি সদস্যরা কোন অভিযোগ ছাড়াই তাকে আটক করে। পরে অনেক অনুনয়- বিনয় করার পর তাকে ছেড়ে দেয়।
সহড়াতলা বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার তসলিম উদ্দিন জানান, এরশাদ আলীকে ফেনসিডিল দিয়ে নাকি অন্য কিছু দিয়ে আটক দেখানো হবে বা ছেড়ে দেওয়া হবে কিনা তা এখনি বলা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার কথা বলেন।
তেতুঁলবাড়িয়া ইউনিয়নের স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বজলুর রহমান হ্যাবা ঘটনাস্থলে থাকলেও বিজিবি’র ভয়ে সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলতে রাজি হননি। তখন স্থানীয়দের চাপে তিনি এলাকা ত্যাগ করেন।
তবে এ ব্যাপারে ৪৭ বিজিবি কুষ্টিয়ার (মিরপুর ) কমান্ডারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইলফোন রিসিভ করেননি।