চট্রগ্রামে ১৫ অক্টোবর থেকে মাসব্যাপী দক্ষিণ এশিয়ায় সর্ববৃহৎ মহিলা বাণিজ্য সম্মিলন”উইমেন এক্সপো-২০১৭”
হোসেন বাবলাঃ বিগত ১৯ বছর আগে চট্টগ্রামের নারী উদ্যোক্তাদের যে পথচলা শুরু হয়েছিল সে অগ্রযাত্রায় আপনাদের সর্বাঙ্গীন সাহায্য-সহযোগিতা আমাদের এই কন্টকময় পথচলাকে মসৃন করেছে। দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসা প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় এতদঞ্চলের নারী সমাজ, শিক্ষা-দীক্ষা, সমাজের উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে পিছিয়ে ছিল। নারী সমাজকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা, নারীর ক্ষমতায়ন, নারীজাতির মেধা ও প্রতিভার বিকাশ এবং উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে হাটিহাটি পা-পা করে আজকের এই অবস্থানে এসে পৌঁচেছি।
নারীদের ক্ষমতায়নে এবং অধিকার রক্ষায় আমরা আজ অনেকে বিভিন্নভাবে জড়িত, কিন্তু আমাদের এই সংগঠনটির সংঘটিত হওয়ার ইতিহাস সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন। আমরা একতাবদ্ধ হয়েছিলাম ব্যবসা ক্ষেত্রে নারীদের অংশ গ্রহন বৃদ্ধিতে এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রসারে নারীদের অংশগ্রহণকে আরো বেগবান করতে। সার্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাই যে, আমাদের দেশের অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত কম। নারীদের দ্বারা ব্যবসা সম্ভব এবং সুযোগ পেলে নারীরা যে এগিয়ে যেতে পারে তার বাস্তব উদাহরণ আজকের চট্রগ্রাম উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি।
উল্লেখ্য যে, নারীদেরকে আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থায় একটি বিশেষণ লাগিয়ে দেওয়া হয়, যেটি হল আমরা পরচর্চা ও গৃহস্থালী কাজের জন্য উপযুক্ত। আমাদের দ্বারা এর বেশী কিছু করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমাদের দেশের সর্ববৃহৎ উৎপাদনশীল ও বৈদেশিক মূদ্রা আয়ের শিল্পখাত “গার্মেন্টস শিল্প” পুরোপুরি নারী নির্ভর। এছাড়া অন্য দুটি বৃহত্তর খাত চা এবং মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পও নারী শ্রমিক নির্ভরশীল। যুগের পরিবর্তনে আজ নারী শ্রমিক ও পেশাজীবিরা সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন। এরপর ও দুঃখের বিষয় যে, আমাদের অর্থনীতিতে যে নারীদের এত বড় সহযোগিতা এবং উপস্থিতি, তা স্বত্বেও তাদেরকে বারবার থাকতে হচ্ছে উপেক্ষিত।
এই উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রাখেন- উইমেন চেম্বার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিসেস আবিদা সুলতানা, উইমেন এক্সপো-২০১৭এর চেয়ারপার্সন রেবেকা নাসরিন, উইমেন চেম্বার পরিচালক-রওশন আরা আলী,লুবনা হারুণ,শাম্মী সুলতানা সহ নির্বাহী কমিটির সদস্যা বৃন্দ এবং উইমেন এক্সপো-২০১৭এর উদযাপন কমিটির সদস্য বৃন্দ । সংবাদ সম্মেলনে ১১তম এই আয়োজনের পার্টনার কান্ট্রি হিসেবে থাইল্যান্ড এবং চায়না কে আমন্ত্রন জানানো হয়েছে বলে চেয়ারপার্সন রেবেকা নাসরিন জানান। এছাড়া ইরান, ইন্ডিয়া,নেপাল,হংকং,জাপান-তাইপে সহ অন্যান্য বািনজ্য সম্প্রসারিত দেশ সমূহ কে মেলার প্রদর্শনীতে অংশ নিতে আমন্ত্রন জানানো হবে বলেও জানান। ইতিমধ্যে মেলার হেলথ্ কেয়ার পার্টনার হয়েছেন সার্জিস্কোপ হাসপাতাল লিমিটেড। ই-কমার্স পার্টনার শপার্স ওয়ার্ল্ড মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তাদের পণ্যের প্রচার-প্রসারের লক্ষে স্টল-প্যাভেলিয়ন এর মাধ্যমে অংশগ্রহনের সুযোগ এবং বিভিন্নভাবে স্পন্সরের মাধ্যমে ব্র্যান্ডিং এর সুযোগ পাবেন। মেলায় ইভেন্ট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবে আউটসোর্স।
পরিশেষে আগামী ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ইং থেকে মাসব্যাপী আয়োজিত দক্ষিণ এশিয়ায় মহিলা উদ্যোক্তাদের সর্ববৃহৎ বাণিজ্য সম্মিলন ১১ঃয ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ডড়সবহ’ং ঝগঊ ঊীঢ়ড় ইধহমষধফবংয ২০১৭ সফলভাবে আয়োজন করার জন্য চট্টগ্রামের সবস্তরের জনগণ, সাংবাদিক, সুশীল সমাজসহ সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন ।