বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট।
কোরবানিকে সামনে রেখে দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলায় এবার ৯ হাজার খামারি গরু মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত। এবারের বন্যা তছনছ করে দিয়েছে তাদের লাভের আশা। এ অঞ্চলে বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। চিকিৎসার অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে শত শত গরু। খামারিদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়ার কথা জানিয়েছে প্রাণি সম্পদ বিভাগ।
গত দুবছর ধরে সীমান্ত দিয়ে দিনাজপুরে ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হওয়ায় দেশি গরুর চাহিদা বেড়ে গেছে। ফলে জেলায় গড়ে উঠেছে ছোট বড় অনেক পশুর খামার। জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছর কোরবানিতে ১ লাখ ১৬ হাজার গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়।
কিন্তু গত ১২ই আগস্ট দিনাজপুরে ভয়াবহ বন্যা হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। পানিবন্দি হওয়ায় উঁচু জায়গা না পেয়ে অনেককে পানির মধ্যে গরু রাখতে হয়েছে। গত ৬ দিনে পানিতে নষ্ট হয়েছে ঘাস আর খড়।
টাকা দিয়েও দোকানগুলো পাওয়া যাচ্ছেনা ভুষি, চকড়। গো-খাদ্য সংকটের কারণে অসুখ দেখা দিয়েছে। ডেকেও চিকিৎসক পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ খামারি ও কৃষকদের।
তবে পশু চিকিৎসকদের দাবি,আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মেডিকেল টিম পশুদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে।
ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মোঃ শাহীনুল আলম বলেন, 'জ্বর হতে পারে, ডায়রিয়া হতে পারে এবং কোন কোন সময় খোরা রোগের প্রাদুর্ভাবও দেখা দিতে পারে। আমরা আমাদের প্রাণিসম্পদের পক্ষ থেকে তাদের মনিটর করছি, জরুরি সেবা দিয়ে যাচ্ছি।'
বন্যায় কোরবানির পশুর স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতির কথা স্বীকার করে জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ আবু কালাম আজাদ জানালেন, খামারিদের পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'আমরা আশা করছি, কুরবানি পর্যন্ত যে সময় আছে তাতে সবাই মিলে কৃষকের সহযোগিতা দিতে সক্ষম হবো এবং এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবো।'
জেলায় ৩ লাখ সাড়ে ৩২ হাজার গরু বন্যাকবলিত হয়েছে। গোখাদ্য কাঁচা ঘাস নষ্ট হয়েছে ৩শ ৪৮ একর এবং খড় নষ্ট হয়েছে দেড় হাজার মেট্রিক টন।