সরকারী ক্রয় কেন্দ্রে পাট দিচ্ছেনা চাষিরা, কম দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়িদের কাছে উৎপাদন খরচ উঠছে না গাংনীর পাট চাষীদের
আল-আমীন সিনিয়র স্টাফ রিপোটার :
সময় মতো পাটের মুল্য না পাওয়ায় সরকারী পাট ক্রয় কেন্দ্রে পাট দিচ্ছেন না চাষিরা। তারা কমদামে পাট বিক্রি করছেন ফড়িয়া ও ব্যবসায়িদের কাছে। স্বল্প মুল্যে পাট বিক্রি করায় চাষিদের উৎপাদন খরচ উঠছে না। এখন পাটকাঠি বিক্রি করে কোন রকম উৎপাদন খরচ পুষিয়ে নিচ্ছে চাষিরা। ফলে অনেকেই আগামীতে পাট চাষ করবেন না বলে জানিয়েছেন।
চলতি মৌসূমে সরকার মন প্রতি পাটের মূল্য নির্ধারণ করেছেন ১৭৫০ টাকা। এতে চাষিরা আশার আলো দেখলেও তা ¤øান হয়ে গেছে। পাট বিক্রির ৬ মাস পরে মুল্য পরিশোধ করার ঘোষণায় কৃষকরা আগ্রহ হারিয়েছে পাট ক্রয় কেন্দ্রে পাট বিক্রয়ের। নগদ মূল্য পাওয়ায় চাষিরা স্বল্প দামেই পাট বিক্রি করছেন। বাজারে মণ প্রতি পাট বিক্রি হচ্ছে ৮শ টাকা থেকে ৯শ টাকা। এতে উৎপাদন খরচ উঠছে না। এক বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনে খরচ হচ্ছে ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা। অথচ ওই জমি থেকে উৎপাদিত পাট বিক্রি করে চাষিরা পাচ্ছেন মাত্র ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা।
কৃষকদের অভিযোগ, প্রতি বছর সরকার ঘোষণা দেন কৃষকদের কাছে পাট কেনার। কিন্তু সময় মতো টাকা পরিশোধ না করায় চাষিরা আগ্রহ হারাচ্ছে। আর সুযোগ বুঝে ব্যবসায়িরা সরকারী পাটক্রয় কেন্দ্র ও বেসরকারি মিলগুলোতে বিক্রি করেন। এতে প্রতি বছরেই সোনালী আঁশ চাষিদের গলার ফাঁস হয়ে দাড়ায়। দাম না পাওয়ায় গত বছরের পাটও রয়েছে অনেক কৃষকের ঘরে । এখনও সে পাট বিক্রি করতে পারেননি।
গাংনীর শিমুলতলা গ্রামের মনিরুল ইসলাম জানান, গেল বছর তিনি ১০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন। সেই পাট অর্ধেক বিক্রি হলেও বাকি অর্ধেক বিক্রি হয়নি। এবারও তিনি ৬ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। পাট ক্রয় কেন্দ্রে পাট নিয়ে গেলে তারা ৬ মাস পরে পাটের মুল্য পরিশোধ করবে বলে জানালে পাট ব্যবসায়িদের কাছে স্বল্প মুল্যে বিক্রি করেন।
ব্যবসায়িদের অনেকেই জানান, মিলগুলেঅতে পাটের চাহিদা কম থাকায় তারা চাষিদের কাছ থেকে কম মূল্যে পাট কিনছেন।
গাংনীর আকুবপুরে সরকারী পাট ক্রয় কেন্দ্রের সহ ব্যবস্থাপক মোঃ ইব্রাহীম জানান, পাট কেনার ৬ থেকে ৭ মাস পর পাটের দাম দেওয়া হয় কৃষকদের। ফলে তারা পাট দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। বাধ্য হয়েই ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পাট কিনতে হয় বলে জানান তিনি। তার পরেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে যৎ সামান্য পাট কেনা হয়েছে।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার রইচ উদ্দীন জানান, উপজেলায় এবার ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। এবার পাটের ফলন ভাল হয়েছে। তবে উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের পাটের মান ভাল হওয়ায় ভাল দাম পাচ্ছেন। জেলায় পাটের মান ভাল করার জন্য কৃষকদের কাঁদামাটি দিয়ে পাট জাগ না দেবার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।