পঞ্চগড়ে ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেইলের শিকার স্কুলছাত্রী আত্মহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান
তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধিঃ তেঁতুলিয়ায় ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেইল শিকার হয়ে স্কুল ছাত্রী রহিমা আক্তার সোনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় দুই ধর্ষককে গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে তেঁতুলিয়ার বিভিন্ন পেশার সহ¯্রাধিক মানুষ। রোববার সকাল ১১ টায় তেঁতুলিয়া উপজেলা সদরের চৌরাস্তা বাজারের ঐতিহাসিক তেঁতুলতলায় ঘন্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে তারা।
তেঁতুলিয়া কাজী শাহাবুদ্দীন স্কুল এন্ড কলেজের আয়োজনে মানববন্ধনে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়। মানববন্ধনের সময় বিক্ষোভ আর প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠে পুরো তেঁতুলিয়া। মানববন্ধনের শিক্ষার্থীরা কালো পতাকা ও কালো ব্যাজ ধারণ করে অংশ নেয়। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন তেঁতুলিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার কাজী মাহবুবুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া, কাজী শাহাবুদ্দীন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ এমদাদুল হক, তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আনিছুর রহমান।
এ সময় বক্তারা অবিলম্বে সোনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনার মূল নায়ক ধর্ষক মনসুর আলম রাজন ও আতিকুর রহমান আতিককে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। সেই সাথে মডেল থানা বিলম্বে মামলা নেয়ার ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ সরেস চন্দ্রকে অপসারণের দাবি জানান।
পরে মানববন্ধনকারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে তারা ধর্ষক রাজন ও আতিকের কুশপুত্তলিকা দাহ করে। পরে তারা একই দাবিতে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রেরণ করে। তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পক্ষে স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন তেঁতুলিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহীন।
উল্লেখ্য, গত ১০ অক্টোবর রাজন ও আতিক নামের দুই ধর্ষকের হাতে সম্ভ্রম হারানোর লজ্জায় ও ব্ল্যাকমেইলের হুমকি সইতে না পেরে কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের নবম শ্রেণির এই মেধাবী শিক্ষার্থী ও পাথর শ্রমিকের কন্যা সোনিয়া আত্মহত্যা করে। পরিবারের অভিযোগ, গত তিন মাস আগে রাজন অসুস্থ্য মায়ের ঔষুধ দেবার নাম করে মোবাইল ফোনে সোনিয়াকে ডেকে নিয়ে উপজেলার এক বাসায় তার বন্ধু আতিকসহ ধর্ষণ করে। সে ধর্ষণ চিত্র মোবাইলে ধারণ করে ইন্টারনেটে প্রকাশের ভয় দেখিয়ে তিন মাস ধরে নানাভাবে ধর্ষণ করে আসছিলেন।
ঘটনাটি মেয়ের কাছ থেকে জানতে পেরে তার মা সেলিনা বেগম ও মামা ফারুক হোসেন রাজন ও আতিকের সাথে কথা বলেন। কিন্তু কাজ হয়নি। এ থেকে মুক্তি চাইলেও ওই হোতাদের হুমকি সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। এ বিষয়ে রাজন ও আতিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করতে গেলেও মামলা না নেওয়ার নানা অজুহাত দেখানো হয় তাদের। পরে গণমাধ্যমের চাপে মডেল থানা গত শনিবার দুপুরে ৯ (ক) ধারায় মামলা রেকর্ড করে।