শ্রীপুরে মাদ্রাসায় ভবন নির্মাণের অজুহাতে বৃক্ষ নিধন
টি.আই সানি,শ্রীপুর(গাজীপুর)প্রতিনিধি গাজীপুরের শ্রীপুরের বিন্দুবাড়ি গাউসুল আজম সিনিয়র মাদ্রাসায় ভবন নির্মাণের অজুহাতে অবাধে বৃক্ষ নিধন করছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। যদিও ভবন নির্মাণের কোন খবর নেই ।ইতিমধ্যে কয়েকদিন ধরে বিদ্যালয়ের আশেপাশের শতাধিক গাছ কাঁটার পর আরো গাছ কাঁটার প্রস্তুতি চলছে। এদিকে মাদ্রসার পরিচালনা পরিষদের সভাপতির একক সিদ্ধান্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ জুড়ে থাকা গাছ কাঁটার প্রতিবাদে মাদ্রাসার তিনজন অভিভাবক প্রতিনিধি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিদ্যালয়ের সভাপতি আবার উপজেলা যুবলীগেরও সভাপতি। মাদ্রাসার অভিভাবক প্রতিনিধি ও রাজাবাড়ি ইউনিয়ন ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আলতাব হোসেন জানান,মাদ্রাসার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ও মাদ্রাসার মনোরম পরিবেশ তৈরীর লক্ষ্যে বিগত ২০ বছর ধরে মাদ্রাসার মাঠজুড়ে ও এর আশেপাশের এলাকায় কয়েকশত গাছ রুপন করা হয়েছিল।প্রত্যেকটা গাছ যখন বড় হয়ে আসছে তখন মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সভাপতি তাঁদের একক ইচ্ছায় অবাধে গাছ বিক্রি করে দিচ্ছেন।এ কাজে আমরা বাঁধা দেওয়ায় গাছ কাঁটা বন্ধ করতে পারিনি। উল্টো তাঁদের দাবী এখানে সংসদ সদস্যের নামে ভবন নির্মাণ করা হবে,যদিও ভবন নির্মাণের কোন খবরই নেই। বিদ্যালয়ের অপর অভিভাবক প্রতিনিধি নূর ইসলাম জানান,এক সময় বিদ্যালয়ের আশেপাশের এ গাছগুলো মাদ্রাসার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতো,ছাত্র-ছাত্রীরা গাছের ছায়ায় হিমশীতল পরশ পেত,কিন্তু গাছগুলো কাঁটার পর এখন মাদ্রাসার দিকে তাকানো যায় না,চারদিকে খাঁ খাঁ পরিবেশ।নানাভাবে চেষ্টা করে গাছগুলো রক্ষা করতে না পারায় আমরা ৩ জন অভিভাবক প্রতিনিধি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি বুরহান উদ্দিন জানান,প্রচলিত বিধি অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোন গাছ কাঁটার প্রয়োজন হলে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিক্রয় কমিটি ও দরপত্র আহবান করে এ পক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। কিন্তু এ মাদ্রাসার গাছ কাঁটার বিষয়ে কোন সভায় এজেন্ডা আনা হয়নি।সবকিছুই সভাপতি একক ভাবেই করতেছেন।আমাদেরকে এ বিষয়ে কখনও অবগত করা হয়নি।আমরা চেয়েছিলাম গাছগুলো যেন রক্ষা পায় কিন্তু তা পারিনি। গাছগুলোর ক্রেতা জয়নাল আবেদীন বেপারী জানান,এ পর্যন্ত আমি ৮২ টি গাছ কেঁটেছি। এবং মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে ৪২ হাজার টাকা দিয়েছি।তবে এ পক্রিয়ায় কোন দরপত্র কার্যক্রমে অংশ নিতে হয়নি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান,বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন গাছ কাঁটার প্রয়োজন হলে উপজেলা পর্যায়ে একটি কমিটি আছে যার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এ কমিটির অনুমোদন ছাড়া গাছ কাঁটা হয়ে থাকলে তা অসচ্ছ পক্রিয়ায় হয়েছে।ইতিমধ্যেই আমি গাছ কাঁটার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান জানান,এ ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না সবই সভাপতি করেছে।তাঁর সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। মাদ্রাসার পরিচালণা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কমর উদ্দিন জানান,স্থানীয় সংসদ সদস্যের নামে একটি ভবন নির্মাণের কারনে গাছগুলো কাঁটা হয়েছে।তবে গাছকাঁটার বিষয়ে কমিটি আছে যে এটা জানা ছিল না।তবে কবে নাগাদ ভবনের কাজ শুরু হবে এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনা আক্তার জানান,এবিষয়ে খবর পেয়েছি।তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।