টানা বৃষ্টিতে জরম দুর্ভোগে পড়েছেন টঙ্গীর মানুষ মো.রবিউল ইসলাম, টঙ্গী।।
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জরম দুর্ভোগে পড়েছেন গাজীপুরের টঙ্গীর মানুষ। কখনো ভারী, কখনো মাঝারি আবার কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে যানজট আর জলজটে নাকাল। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে ফুটপাত দিয়েও চলাফেলার উপায় নেই। অনেক স্থানেই স্ল্যাব ভাঙা। কোথাও আবার স্ল্যাবই নেই, নালা উন্মুক্ত। রাস্তা সংস্কারের নির্মাণসামগ্রী প্রধান সড়কে ফেলে রাখায় ভোগান্তি আরো বেশি। এমনিতেই সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় এই নগর। সড়কের কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পানি। এ সময় কোনটা নালা কোনটা সড়ক তা বোঝার উপায়ই থাকে না। ময়লা-আর্বজনা আর সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতায় বাসা বাড়ির ভিতরে দুর্গন্ধসহ চলাফেরায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠে দেশের সর্ববৃহৎ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের টঙ্গী অ ল। এ অ লের মোট ১৫ ওয়ার্ডের মধ্যে প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে একই দৃশ্য বিরাজমান। এর মধ্যে ৪৮, ৪৯,৫৪, ৫৫, ৫৬ ও ৫৭ নং ওয়ার্ডের অবস্থা করুন। এসব ওয়ার্ড গুলোর রাস্তা-ঘাট তো নয় যেন পূরো এলাকাই একটি ময়লা-আর্বজনার ডাস্টবিন। বাহিরে তো দুরের কথা ময়লা-আর্বজনার দুর্গন্ধে বাসা বাড়ীতে থাকাও দায় হয়ে পড়ে এলাকাবাসীর। নাকাল অবস্থার মুখে জিম্মি হয়ে পড়ে পূরো টঙ্গীবাসী। আজ শনিবার পথচারীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, কোনো যানবাহন না পেয়ে হেঁটেই যাচ্ছেন কর্মস্থলে। তার আরো বলেন, বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমে গেছে। রিকশাও পাচ্ছি না, কী আর করার নোংরা পানিতে হেঁটেই যাচ্ছি। এদিকে বৃষ্টির ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এমনিতেই ভারী বৃষ্টিপাত হলে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। গত কয়েক দিনের একটানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী। এলাকাবাসী জানান, এ এলাকার জনজীবনে ময়লা-আর্বজনায় পরিপূর্ণ। ময়লা-আর্বজনা ফেলার ডাস্টবিন না থাকায় তাদের যেখানে সেখানে ময়লা ফেলতে হয়। নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আর্বজনা রাখলেও তা সময়মত পরিষ্কার করা হয় না। এসব ময়লা-আর্বজনার স্তুপের কারণে সামান্য বৃষ্টিতে তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় আর চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্থানীয়দের। টঙ্গী অ লের খাঁপাড়া রোড, সফিউদ্দিন রোড়, কফিল উদ্দিন রোড, সুরতরঙ্গ রোড়, লেদু মোল্লা রোড়, মোক্তার বাড়ি রোড, টঙ্গী সরকারী হাসপাতাল প্রাঙ্গন ও থানার সামনেসহ পূরো এলাকা জুড়েই পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ও সুয়ারেজর ব্যবস্থা না থাকায় জনসাধারণ চলাচলে নেমে আসে চরম ভোগান্তি। হাসপাতালের সামনের প্রাঙ্গণ উঁচু করা হলেও পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় হাসপাতালে পানি ঢুকে চিকিৎসা সেবাও হয়েছে ব্যহত। পানির জন্য থানায় পুলিশের সেবা নিতে কোন লোক থানায়ও ঢুকতে বা বের হতে পারেনা। এতে থানার স্বাভাবিক কার্যক্রমও ব্যাহত হয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম এ মান্নানের সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয় করে ড্রেন পরিস্কার করেছিলাম। আমাকে জেলে পাঠিয়ে দেড় থেকে দুই বছরে ড্রেন ও সুয়ারেজ পরিস্কারের কোন কার্যক্রম করা হয়নি বলেই এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে জনগনের দূর্ভোগ বেড়েছে। আবার দায়িত্ব পেয়েছি, আশা করি নতুন করে অল্প সময়ের মধ্যে জনগনের যতটুকু কাজে লাগতে পারি তা চেষ্টা করে যাব।