কিশোরগঞ্জের বেকারীতে নোংরা পরিবেশে তৈরী হচ্ছে খাদ্য
নীলফামারী করেসপন্ডেনট:
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নের নয়ানখাল বৈদ্যপাড়া এলাকার দেলাল হোসেনের বাড়ীতে গড়ে তোলা দরবার বেকারীতে নোংরা পরিবেশে তৈরী করা হচ্ছে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,নি¤œমানের ময়দা,ময়লাযুক্ত শরীরের ক্ষতিকারক পামওয়েল তেল ও বিভিন্ন ক্যামিক্যাল মিশ্রিত পারফিউম মিশিয়ে তৈরী করছে রুটি ও বিস্কুটের খামির। তৈরী করা ময়দার খামিরে কর্মচারীদের শরীর থেকে টপটপ করে ঝড়ে পড়ছে ঘাম। আর এসব খাদ্য খেয়ে গ্রামের শিশু,বৃদ্ধসহ নানান বয়সি মানুষ অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে।
১নং
বেকারীর ভিতরে গিয়ে দেখা গেছে, একটি পাতিলে ক্যামিকেল মিশ্রিত কিছু পারফিউম ও চিনি দিয়ে তৈরী করা চিনির সিড়ায় ঝাঁক বেঁধে পড়ছে মাছি। আর ময়লাযুক্ত পামওয়েলে ভেসে আছে একটি ময়লা পলিথিন।
আবার অন্যদিকে গ্রামের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করা মেয়াদোত্তীর্ণ রুটিগুলো ফেরত নিয়ে এসে এবং টেবিলের গায়ে লেগে থাকা ময়লাযুক্ত ময়দার খামির দিয়ে বেকারীতে তৈরী করা হচ্ছে মুখরোচক খাবার মিষ্টিটোষ্ট ও ঝালটোষ্ট।
২নং
আর এসব খাদ্য খেয়ে প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে নানান বয়সি সাধারণ মানুষ। কি দিয়ে তৈরী করা হচ্ছে বেকারীর পন্য তা জানে না বেকারীর মালিক দেলাল হোসেন। মালিককে ক্যামিকেল মিশ্রিত চিনির সিড়া দিয়ে কি করা হয় জানতে চাইলে তিনি তার সদুত্তোর দিতে পারেনি।
ময়লাযুক্ত ময়দার খামির ও মেয়াদোত্তীর্ণ রুটি কি কাজে ব্যবহার করা হয় ? উত্তরে দেলাল হোসেন বলেন,এগুলো পুকুরে ফেলে দেই এবং পাতিলে জমানো এসব কি তা আমি জানি না। কারিগররা আমার কাছ থেকে যা লাগে আমি কিনে দেই। তবে কোন জিনিস দিয়ে কি তৈরী করা হয় আমি তা জানিনা।
৩নং
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক বেকারীর কারিগর বলেন,এসব ময়লা যুক্ত ময়দার খামির ও মেয়াদোত্তীর্ণ রুটি দিয়ে তৈরী করা হয় টোষ্ট বিস্কুট। এসব কোন কিছু নষ্ট করা হয়না। আবার মেয়াদোত্তীর্ণ বিষ্কুটের গুড়া ও নি¤œমানের সেমাই দিয়ে তৈরী করা হয় মিষ্টি সিংড়া। কোন খাবারের প্যাকেটে নেই কোন উৎপাদনের ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ।
৪নং
দরবার বেকারীর মালিক বেকারীতে কর্মরত কোমলমতি শিশুদের দিয়ে কাজ করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। সকাল ৮ থেকে শুরু করে রাত ১২টা পর্যন্ত কাজ করে শিশু শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দেয়া হয় ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা।
উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টরের দায়িত্বে থাকা জিল্লুর রহমানের এসব দায়িত্ব থাকলেও তিনি প্রতিমাসে একবার করে বেকারীতে গিয়ে মালিকদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহন করেন। কথায় আছে-“ভূঁত তাড়ানোর ষড়িসায় ভূত”।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর জিল্লুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি উৎকোচ গ্রহনের কথা অস্বীকার করে বলেন,আমি নিয়মিত ভাবে বেকারীগুলো পরিদর্শন করি এবং তাদেরকে সচেতন হওয়ার জন্য বলি। তবে তাদের মধ্যে সচেতনতাবোধ তৈরী হচ্ছে না।
আপনার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে এসব বিষয়ে জানান কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে লাভ কি? সমস্ত কিছু আমার উপরেই বর্তায়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাহিদ তামান্না বলেন,এ বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নেই আমি এ উপজেলায় নতুন। তবে যে কোন সময়ে মোবাইল কোর্ট করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।