নওগাঁ সদর হাসপাতাল এখন রোগী ধরা দালাল ও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দখলে
নওগাঁ সদর হাসপাতাল এখন রোগী ধরা দালাল ও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দখলে চলে গেছে। প্রতিদিন প্রধান ফটকে সকাল ৯টার পর থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন ক্লিনিকের দালাল এবং অর্ধশত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির অবস্থান রীতিমতো তাদের দখলে চলে যায় হাসপাতালের প্রধান ফটক।
গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কোন রোগি চিকিৎসককে দেখিয়ে বের হলে সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা তার হাত থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে নিচ্ছেন দেখার জন্য। তাদের প্রেসক্রিপশন দেখা শেষ হলে রোগি ও তার লোকজন একটু সামনে আগাতেই কয়েকজন লোক ও এক নারী তাদের ঘিরে ধরে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এরা বিভিন্ন ক্লিনিকের রোগি ধরা দালাল।
স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে হাসপাতালের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। ফরিদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, গত এক মাস আগে তিনি তার মাকে নিয়ে এসেছিলেন হাসপাতালে আজ এসেছেন তার ভাগ্নীকে ডাক্তার দেখাতে। হাসপাতালে ঢোকার আগেই ক্লিনিকের দালালরা তাকে ঘিরে ধরে কমমূল্যে তাদের ক্লিনিকে অপারেশনসহ সব কিছু করা হয় এমন কথা বলে টানাটানি শুরু করেন। এ হাসপাতালে কোন শৃঙ্খলা নেই। স্থানীয় হাসাইগারী এলাকা থেকে পেটের ব্যাথার জন্য আসা রুবিনা জানান, টিকিট কাটার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছি। এমন সময় পিছন থেকে এক নারী ডেকে জানতে চায় কি জন্য এসেছি। আমি গরিব মানুষ সরকারি হাসপাতালে এসে দেখি টানাটানি চলছে। একজন বলে আমার সাথে চলেন আর একজন বলে আমার সাথে আসেন। এসময় ক্লিনিকের নারী দালালরা সাংবাদিকের উপস্থিতি দেখে সরে পড়েন।
হঠাৎ দালালের এতো দৌরাত্ম বৃদ্ধির কারণ খুঁজতে ভেতরে গিয়ে জানা গেল, গত দুই মাস হলো এ হাসপাতালে নতুন তত্বাবধায়ক যোগদান করেছেন। প্রশাসনিক কোন কিছু এখনো নিয়ন্ত্রণে নেই। এর ফলে হাসপাতালকে এখন রোগি ধরার ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করছে দালাল চক্র।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রওশন আরা জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে দালালদের নিয়ন্ত্রণে তিনি আগামীতে শক্ত পদক্ষেপ নিবেন এমন পরিকল্পনা করছেন বলে জানান।