যশোরাঞ্চলে সড়ক মহাসড়কগুলো গাড়ীর জন্য এখন চরম শত্রু?
মীর ফারুক শার্শা (যশোর) প্রতিনিধিঃ গাড়ীর প্রাণ হলো রাস্তা বা সড়ক, রাস্তা বা সড়কহীন গাড়ী অচল । গাড়ী চলাচলের প্রধান দাবী হলো সুন্দর সাবলীল রাস্তা। কিন্তু যশোর অঞ্চলে মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়কগুলো এখন গাড়ীর জন্য চরম শত্রু হয়ে দাড়িয়েছে। যশোর অঞ্চলে সড়ক মহাসড়কগুলো চরম দুর্দশার ফলে প্রতিদিন পরিবহন, ট্রাক, যাত্রীবাহী বাস, জেএসএ, ইজিবাইক, মটর সাইকেল, ভ্যান সহ অন্যান্য যানবাহন সমুহ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। যশোর অঞ্চলে সড়ক মহাসড়কগুলো পিচের সলিং উঠে ছোট বড় খানা খন্দে পরিপূর্ণ। ফলে প্রতিনিয়ত সড়কগুলোতে গাড়ী চাকা পামচার ও বাষ্ট, রাস্তায় গাড়ী উল্টে যাওয়া ও দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণ হারানো, পঙ্গুত্ব বরণ নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
যশোরাঞ্চলের মহাসড়কগুলোর মধ্যে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক, যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক, যশোর-নড়াইল মহাসড়ক, যশোর-খুলনা মহাসড়ক, যশোর-মাগুরা মহাসড়ক, যশোর-কেশবপুর মহাসড়ক, শার্শা বাগআঁচড়া- সাতক্ষীরা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে, কিছু কিছু মহাসড়কে সম্পূর্ণ পিচের সলিং উঠে ছোট বড় খানা খন্দে ভর্তি হওয়ার ফলে যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল যশোর-ট-১১-১৩৪৩ ট্রাক ঢাকা থেকে রপ্তানী পণ্য মশারী ভারতে রপ্তানীর জন্য ভোমরার উদ্দেশ্যে আসলে যশোর-বেনাপোল মহাসড়ক কলাগাছি নামক স্থানে মালসহ রাস্তার উপর উল্টে যায়। দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। খুলনা মেট্রো-ট-১১-০৯৫২ পিকআপ গাড়ী মাছ নিয়ে যশোর যাওয়ার উদ্দেশ্যে নাভারণ পুরনো বাজারে পৌছালে সড়কের কারণে গাড়ীর ডাম্পার ভেঙে যায়। খুলনা মেট্রো-ট-১১-১৩৭৫ যশোর-ঝিনাইদহ যাত্রীবাহী বাস বারবাজার মহাসড়কে চাকা বাষ্ট হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। একই সড়কে উত্তর অঞ্চল থেকে পাট বোঝাই একটি ট্রাক যশোর চাঁচড়া মোড়ের অদুরে ফিল্ম ষ্টেশন এর সামনে মহাসড়কের উপর উল্টে যায়। এভাবে প্রতিদিনই এই দুর্ঘটনার চিত্র দেখা যায় যশোর অঞ্চলে প্রতিটি সড়ক মহাসড়ক।
যশোর অঞ্চলে মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়কে চরম দুর্দশার কারণে এই অঞ্চলে ব্যবসায়ী ও পরিবহন মালিকরা প্রতিনিয়ত আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এই অঞ্চলে মহাসড়কের কারণে বেনাপোল স্থলবন্দর, ভোমরা বন্দর ও বিসিক শিল্পনগরী নওয়াপাড়ার ব্যবসায়ীরা পণ্য পরিবহনে দ্বিগুন ভাড়া গুনতে হচ্ছে এবং পরিবহন মালিকদের প্রতি মাসে বিপুল পরিমাণ গাড়ীর ডেমারেজ দিতে হচ্ছে বলে জানান অনেকে।
ট্রাক ড্রাইভার আব্দুল আলিম বলেন, সড়কের কারণে জীবন বাজী রেখে এই সড়কগুলোতে আমাদের গাড়ী চালাতে হয়। শত সাবধানতার সত্ত্বেও বেহাল সড়কের কারণে প্রতিনিয়ত আমরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছি। তিনি অতি সত্ত্বর সড়ক সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করেন।
ট্রাক মালিক মুসা করিম বলেন, সড়কের জন্য প্রতি বছর সরকারকে আরও বিপুল পরিমাণ ভ্যাট দিয়ে থাকে। কিন্তু সেই সড়কের করুন দশার ফলে প্রতি মাসে পরিবহনের পিছনে বিপুল পরিমাণ টাকা গাড়ী সংস্কারে খরচ হয়ে যাচ্ছে। পরিবহন ব্যবসা করে এখন বেশি লাভবান হওয়া যাচ্ছে না। তিনি অতি সত্তর সড়কগুলোর সংস্কারের দাবী জানান।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক বিভাগ (সওজ) যশোর এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মেহেদী ইকবালকে ০১৭৩০-৭৮২৭৬৭ এই নাম্বারে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।