হিমাগারে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশী আলু সংরক্ষন করায় বিপাকে কৃষক
জিয়াউর রহমান :
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় দেড়হাজর কৃষকের ৩০হাজার বস্তা বীজ আলু পচে গেছে। ফলে আগাম ও মৌসুমী আলু চাষাবাদে ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন আলু চাষিরা। এই বীজ আলুগুলো সংরক্ষনে ছিল তারাগঞ্জ সিনহা স্পেশালাইজড কোল্ড ষ্টোরে। চাষীরা ক্ষতি পূরণ দাবী করে তারাগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে,কিশোরগঞ্জ উপজেলায় বীজ সংরক্ষনের জন্য হিমাগারে জায়গা না থাকায় আলু চাষিরা বিভিন্ন হিমাগারে বীজ আলু সংরক্ষন করেন। এরমধ্যে দেড় হাজার চাষী ৩০ হাজার বস্তা বীজ আলু তারাগঞ্জ সিনহা স্পেশালাইজডকোল্ড ষ্টোরে সংরক্ষন করে। কিন্তু চাষীরা হিমাগার থেকে বীজ বের করে নিয়ে আসার পর ৫০ভাগ আলুর বীজ পচে যায়। আর ৫০ভাগ আলুর বীজ জমিতে লাগানোর পর পচে যায় বলে চাষিরা অভিযোগ করেন।
নিতাই ইউনিয়নের মুশরুত পানিয়াল পুকুর গ্রামের আগাম আলু চাষী মজিদুল ইসলাম বলেন,আমি সিনহা কোল্ড ষ্টোরে ২০০বস্তা বীজ আলু সংরক্ষন করেছিলাম। কিন্তু হিমাগার থেকে বের করে বাড়ীতে ফ্যান করার সময় ৫০ভাগ বীজ আলু পচে যায় এবং বাকীগুলো জমিতে লাগার পর পচে যায়। পরে বাজার থেকে চড়া মূল্যে বীজ কিনে জমিতে লাগাই। উপজেলা সদরের আলু চাষী জামিনুর রহমান মানিক বলেন, আমি ওই হিমাগারে ৮৮৮বস্তা বীজ আলুরেখেছিলাম। হিমাগারের মালিক কর্তৃপক্ষ ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশী বীজ সংরক্ষন করে। এছাড়াও অ-ব্যস্থাপনার কারণে আমার বীজ আলু ২৪৩বস্তা পচে গেছে। আমি প্রতিবছর ১০০থেকে ১১০বস্তা আলু চাষাবাদ করি। বীজ পচে যাওয়ার কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারি নাই।
এরকম ক্ষতিগ্রস্থ্য চাষী মুশরুত পানিয়াল পুকুর গ্রামের এনামুল হকের ৩৪বস্তা,মজিদ মিয়ার ১৭বস্তা,মশিয়ার রহমান ৩৬বস্তা,শামীম মিয়ার ১০বস্তা,বাহাগিলী ইউনিয়নের নয়ানখাল গ্রামের এমদাদুল হকের ৩৫বস্তা,শফি মাহমুদের ১১বস্তাসহ আরও অনেক চাষী তাদের বীজ আলু পচে যাওয়ার বিষয় অভিযোগ করেন। তারাগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন,কিশোরগঞ্জের আলু চাষিদের অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন,এই উপজেলায় আগাম আলু চাষাবাদের জন্য উপযোগী। প্রতিবছর ৪ হাজার থেকে ৫হাজার হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষাবাদ করা হয়। কিন্তু এ বছর ৩হাজার ৭৭ হেক্টর জমিতে আগাম আলু চাষাবাদ করা হয়েছে। কৃষকের আলুর বীজ পচে যাওয়ায় চাষিরা ক্ষতির সমুখিন হয়েছে।