গাংনীর সাহারবাটি বাজারে সরকারি জমি ভাড়া দিয়ে অর্থবানিজ্য বাজার উন্নয়ন ও রাস্তা নির্মান কাজ ব্যাহত।
এম এ লিংকন,মেহেরপুরঃ গাংনী উপজেলার সাহারবাটি চারচারা বাজারে সরকারি জমি ভাড়া দিয়ে অর্থবানিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সাহারবাটি গ্রামের মৃত আজাহরের ছেলে এলাহী বকস ও এলাহী বকসের ছেলে আশাদুল ইসলাম সরকারি জমি অবৈধ ভাবে দখল করে সেখানে ৬/৭ জন ব্যাবসায়ীকে টিন শেডের দোকান তৈরীর অনুমোতি দিয়ে ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে যুগ যুগ ধরে অর্থবানিজ্য চালিয়ে আসছেন।
বাজারের ব্যাবসায়ী সামাদ হোটেলের মালিক আঃ সামাদ জানান, সরকারি জমিতে আমরা ব্যাবসা করি কিন্তু এলাহী বকসকে প্রতি মাসে ১২০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। প্রতি মাসে আমরা ভাড়ার রশিদ পেয়ে থাকি। এলাহী বকস ও আশাদুল ইসলাম সরকারি জমি ভাড়া দিয়ে দাম্ভিকতার সাথে রীতিমত রশিদ দিয়ে অর্থবানিজ্য করছেন। মিস্টি ব্যাবসায়ী আজিজুল হক জানান, আমরা রাস্তায় পার্শে বসে ব্যাবসা করি কিন্তু প্রতিমাসে ৪০০ টাকা করে দিতে হয় এলাহী বকসকে।ব্যাবসায়ী গোলাম জানায়, এখানে আমি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ব্যাবসা করি, তার জন্য প্রতি মাসে ৫শ টাকা দিতে হয় এলাহী বকসকে। টাকা না দিলে আমাদের মালামাল ফেলে দেবার হুমকি দেয়। আমরা খুদ্র ব্যাবসায়ী, ‘দিন আনি, দিন খাই’ বড় লোকদের সাথে ঝামেলায় জড়াতে চাইনা। সেলুন দোকান দার তাজু জানায় এলাহী বকস আমাদের কাছ থেকে রশিদ দিয়ে ৫০০ টাকা নিয়ে যায়। আমরা মুর্খমানুষ। এতোসেতো বুঝিনা। বাজার সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান গেটের কিছু অংশ খুদ্র ব্যাবসায়ীরা দখল করে নিয়েছে ফলে স্কুল গেট প্রায়ই সময় বন্ধ রাখতে হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকলেচুর রহমান জানান, দোকান ঘর নিমার্নে আমরা নিষেধ করেছি, কিন্তু স্থানীয় এলাহী বকস ও তার ছেলে প্রভাব খাটিয়ে ব্যাবসায়ীদের বসিয়ে সেখান থেকে অর্থ বানিজ্য করছেন।দেখার বা বলার কেউ নেই।
পল্লী চিকিৎসক খলিলুর রহমান জানান, সাহারবাটি বাজারটি আস্তে আস্তে ব্যাবসায়ীরা দখর করে নিয়েছে। জনগনের চলাচলের একমাত্র রাস্তা পাকা করনের কাজ শুরু করলে এলাহী বকস তাতে বাধা দিয়ে কাজ বন্ধ করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। সাবেক ইউপি সদস্য রুহুল কুদ্দুস জানান, সরকারি ম্যাপ অনুযায়ী রাস্তার যে নকশা আছে সে নকশা অনুযায়ী রাস্তা নির্মান করতে বাধা দিচ্ছেন এলাহী বকস। তিনি সরকারি নিয়মনীতিকে তুয়াক্তা না করে ক্ষমতার দাপটে রাস্তা নির্মান কাজ বন্ধ রেখেছেন। রাস্তাটি পাকা করণ না করতে পারলে সাহারবাটি গ্রামের সর্বসাধারনকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে। স্থানীয়রা আরও জানায়, এলাহী বকস একজন মামলা বাজ লোক তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বল্লে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করেন, ফলে তার কেউ বিরোধীতা করেন না। সাহারবাটি বাজার কমিটির সভাপতি আতাউর রহমান টোকন জানান, বেশ কয়েকদিন আগে এলজিইডির তত্বাবধানে চারচারা বাজার হতে ভাটপাড়া মেইন রাস্তা প্রর্যন্ত পাকা করনের কাজ শুরু হয়। ঠিকাদারের লোকজন কাজ শুরু করতে গেলে এলাহী বকস ও তার লোকজন রাস্তা নির্মান কাজে বাধা সৃষ্টি করেন। পরে ঠিকাদারের লোকজন কাজ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে জোড়াতালি দিয়ে রাস্তার কাজ শুরু করেন। কিন্তু রাস্তাটি রাস্তার ম্যাপ অনুযায়ী হচ্ছেনা ,একেবারে সংকুচিত রাস্তা হচ্ছে যা জনগনের কোন কাজেই আসবেনা। স্থানীয় তহশিলদার নুরুল হুদা জানান, এলাহী বকস যে সকল দোকান বসিয়ে অর্থবানিজ্য করছেন তা অবৈধ। জায়গাটি সম্পুর্ন সরকারের। আর, এস-২১৮৫ দাগের জমি সরকারি ১ নং খতিয়ান ভুক্ত। দোকান দারদের দখল থেকে দখল মুক্ত করতে না পারলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হবে। সেই সাথে বাজার উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হবে। এ ব্যাপারে এলাহী বকস অর্থবানিজ্যের বিষয়টি স্বিকার করে বলেন,আমার জমির সম্মুখে যে জমি আছে তা সরকারের হোক কিংবা সাধারনের হোক তা আমার। এদিকে বাজারের জমি ভুমি দস্যু এলাহীর হাত থেকে সরকারি সম্পদ দখল মুক্ত করনের জন্য সাহারবাটি গ্রামের সর্বসাধারণ এক জরুরী বৈঠক করেছে। সেখানে সর্ব সাধারণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা ভুমি কর্মকর্তার জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।