বাদলগাছীতে পুলিশের নামে চাঁদাবাজীর অভিযোগ আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে।
জয়পুরহাট আক্কেলপুর প্রতিনিধিঃ নিরেন দাস।
নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলাতে ডিবি পুলিশের নাম ভাঙিয়ে মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেয়ার জন্য এক যুবকের পরিবার থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার বালুভরা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আয়েন উদ্দীনের ছেলে এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ মুক্তি বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী ওই যুবক একই ইউনিয়নের ঢেকরা গ্রামের মৃতঃ কছিম উদ্দিনের ছেলে শাহিন আলম ওরফে সেজু (২৬)
গত ১৪ নভেম্বর রাতে এ ঘটনাটি ঘটে।
বদলগাছী থানার মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে উপজেলার বালুভরা ইউনিয়নের মির্জাপুর সূর্যকান্তির মোড় থেকে ২০ পিস ইয়াবাসহ একই এলাকার আবদুস সাত্তার শেখের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেনকে (৪০) আটক করে নওগাঁ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই শাহাদত হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়। ওইদিন তিনি বাদি হয়ে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আটক সাখাওয়াত হোসেনকে আসামি করে বদলগাছী থানায় একটি মামলা করেন। পরদিন ১৫ নভেম্বর আটক সাখাওয়াত হোসেনকে আদালতের মাধ্যমে নওগাঁ জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক মাস থেকে শাহিন মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। গত ১৪ নভেম্বর মাদক ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গেই ছিল শাহিন আলম। পুলিশ সাখাওয়াত হোসেনকে আটক করলেও শাহিন আলম সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে শাহিন আলম তার বাড়িতেও ছিল না। রাত প্রায় ২টার দিকে চেয়ারম্যানের ছেলে আহসান উল্লাহ মুক্তি ভুক্তভোগী শাহিন আলমের বাড়িতে গিয়ে শাহিনের নামে মামলা হচ্ছে বলে ভয় দেখান। এসময় মামলা থেকে বাঁচতে শাহিনের পরিবারের কাছে এক ঘণ্টার মধ্যে ৬০ হাজার টাকা দাবি করেন মুক্তি।
এছাড়া আহসান উল্লাহ মুক্তি প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকায় গোপনে মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী শাহিনের মা শেফালি বলেন, রাতে ছেলে বাড়িতে না আসায় ছেলের বউ, নাতি ও আমি কান্না করছিলাম। এসময় আহসান উল্লাহ মুক্তি এসে ছেলের নামে মামলা হচ্ছে বলে ভয় দেখিয়ে ৬০ হাজার টাকা দাবি করে। গরীব মানুষ আমি ঢাকায় বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাই। ১৫-২০ দিন হলো গ্রামের বাড়িতে এসেছি। তিনি বলেন, মুক্তি আরো ভয় দেখায় টাকা না দিলে পুলিশ এসে ঘরের ইট খুলে নিয়ে যাবে। আমাদেরও ধরে নিয়ে যাবে।
তাই দ্রুত টাকার ব্যবস্থা করে ডিবি পুলিশকে দিয়ে নাম কেটে নিতে হবে। এক ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয় টাকা সংগ্রহের জন্য। রাতেই আমি বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা সংগ্রহ করে স্থানীয় সেকেন্দার আলী ওরফে ইসকেনের হাত দিয়ে মুক্তির হাতে টাকাগুলো দিই। পরে মামলার চার্জশিট উঠিয়ে দেখি আমার ছেলের নামে কোনো মামলা নেই। মামলার ভয় দেখিয়ে কেন আমার কাছ থেকে টাকাগুলো নিয়েছে আমি এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে সেকেন্দার আলী ওরফে ইসকেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ৩০ হাজার টাকা আহসান উল্লাহ মুক্তিকে দেয়া হয়েছে। ওই টাকাগুলো আবার মুক্তি ডিবি পুলিশকে দিয়েছে।
এ বিষয়ে আহসান উল্লাহ মুক্তি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন কিছু ব্যক্তি এটি রটিয়েছে আমি কোনো টাকা নিই নি।
এবং আমি আমার এলাকা মাদকমুক্ত করতে আমি যথেষ্ট তৎপরতা চালিয়েছি বলেই আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে কিছু চক্র মহল।
এ বিষয়ে জানতে নওগাঁ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকিরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ডিবি পুলিশের নাম ভাঙিয়ে কেউ টাকা নিয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে যদি কেউ টাকা নিয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।