কুমিল্লায় ভুল চিকিৎসায় ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর অপারেশনের পর কন্যাশিশু ও মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
সদরুল অাইন :
বুধবার সকালে উপজেলার মাধবপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার রয়েল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম মোসা. সুনিয়া আক্তার (২০)। তিনি উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের কান্দুঘর মধ্যপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী মো. উজ্জলের স্ত্রী।
নিহতের মা মনোয়ারা বেগম জানান, প্রসব ব্যথা উঠলে বুধবার ভোর ৫টায় সুনিয়া আক্তারকে মাধবপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার রয়েল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. শরীফ আহাম্মদ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ভোর ৬টায় তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়।
প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ওই হাসপাতালের এক আয়া অপারেশন থিয়েটার থেকে একটি কন্যা শিশু এনে মনোয়ারা বেগমের হাতে তুলে দিয়ে বলেন, বাচ্চাটির অবস্থা ভালো নয়, তাকে জরুরি ভিত্তিতে দেবিদ্বার হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। তিনি তাৎক্ষণিক বাচ্চাটি নিয়ে দেবিদ্বার হাসপাতালে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার বাচ্চাটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
তাৎক্ষণিক তিনি কন্যা সন্তানটি নিয়ে রয়েল হাসপাতালে ফিরে আসেন। তার মেয়ে সুনিয়া আক্তারের অবস্থা জানতে চাইলে ডাক্তার শরীফ বলেন, মেয়ের অবস্থাও বেশি ভালো নয়। তাকে কুমিল্লা কোচাইতলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
সকাল ৯টায় একটি মাইক্রোবাসে করে সুনিয়াকে কুমিল্লা নেয়ার প্রস্তুতি নিলে ডাক্তার শরীফ নিজেও কুমিল্লা যাবেন বলে সুনিয়ার সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাগজপত্র তার হাতে নিয়ে নেন। এরপর তিনি প্রস্রাব করার কথা বলে আর ফিরে আসেননি।
তখন মনোয়ারা বেগম তার ছেলে ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজনসহ সুনিয়াকে সঙ্গে নিয়ে কুমিল্লা কোচাইতলী হাসপাতালে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুনিয়ার অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে জানান।
এদিকে হাসপাতালের ডাক্তার, কর্মচারী ও মালিক সবাই পালিয়েছে। লাশ মাইক্রোবাসের মধ্যে রেখে হাসপাতালের লোকজনের জন্য তারা অপেক্ষা করতে থাকলে বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে আসে। তখন ওই এলাকার শত শত জনগণ উপস্থিত হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিচার দাবি করেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা হাসপাতালের ২/৩টি গ্লাস ভাংচুর করেন।
খবর পেয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানার এসআই যুযুৎসু চাকমা ও সঙ্গীয় ফোর্স বিকাল ৪টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে লাশ দুটি উদ্ধার করে।
এসআই যুযুৎসু চাকমা জানান, হাসপাতালের ডাক্তারসহ কোনো কর্মচারী বা মালিক কাউকে পাওয়া যায়নি। ডাক্তারের ভুল চিকিৎসার কারণে দুটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।