বামন্দী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের চরম অনীয়মের অভিযোগ
এম এ লিংকন,মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী সাব জোনাল অফিসে অনীয়মের মাত্রা চরম পর্যায়ে পৌছেচে বলে ঐ এলাকার গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। বামন্দী এলাকার গ্রাহকর্ াঅভিযোগে জানান, নীয়মানুযায়ী নতুন সংযোগ লাগানোর আবেদন গ্রহন করে তার পর পরিদর্শনে যাওয়ার কথা থাকলেও বামন্দী পল্লী বিদ্যুতের পরিদর্শক হরিদাশ পাল এর নিজেস্ব নিয়মানুযায়ী আবেদন জমা নেওয়ার আগে পরিদর্শন করেন। এলাকাবাসির অভিযোগ আবেদন না গ্রহন করে তার যাকে পছন্দ হয় তার আবেদন গ্রহন করেন এবং পরবর্তিতে আর পরিদর্শনে যাওয়া লাগেনা বলে একাধিক সুত্রে জানা যায়। এক্ষেত্রে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন পরিদর্শক হরিদাশ পালকে অতিরিক্ত টাকা যে দিয়ে খুশি করতে পারে তার সংযোগটি আগে লাগানোর ব্যাবস্থা করে থাকেন। তবে একথা অস্বীকার করেন অভিযুক্ত হরিদাশ পাল। তিনি দাবি করেন আমাদের অফিস থেকে কোন গ্রাহককে অযথা হয়রানি করা হয়না। তারা তাদের ভুলের কারণে হয়রানির শিকার হন। ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে হরিদাশ পাল বলেন গ্রাহকরা আমাদের কাছে আসার আগেই তারা দালালদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের হাতে টাকা দিয়ে পরে আমাদের কাছে আসেন কাজের খবর নিতে। এদিকে গ্রাহকরা জানান আমরা অফিসে নতুন সংযোগের জন্য গেলে দিনের পর দিন ঘুরলেও আমাদের সাথে তারা কথা বলার সময় দিতে চাননা। তাই বাধ্য হয়েই পল্লী বিদ্যুৎ সম্পর্কে যারা কম বেশি বোঝে তাদের মাধ্যমে আমরা যোগাযোগ করি। সাধারণ গ্রাহকরা আরো জানান তৃতীয় ব্যাক্তির মাধ্যমে যোগাযোগ করলে টাকা বেশি লাগলেও কাজটি দ্রুত হয়ে যায় তাই আমরা বাধ্য হয়েই অন্য লোকের মাধ্যমে অফিসে টাকা দিয়ে থাকি। অফিস সুত্রে জানা যায়, আবাসিক সংযোগ লাগাতে সর্বসাকুল্যে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা লাগে। অথচ দালালদের মাধ্যমে কাজ করলে সে ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ হাজারের বেশি লাগে। এমনকি কাজটিও হয় দ্রুত। আবার অনেকে দালালদের মাধ্যমে কাজ করে প্রতারণার শিকারও হচ্ছেন অনেকে। সাধারণ গ্রাহকদের সাথে জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন আমরা সরাসরি অফিসে নতুন সংযোগের জন্য গেলে আমাদের সাথে তারা কথায় বলতে চাননা। বার বার চেষ্টা করলে অফিসের লোক অনেক সময় বিরক্ত সুরে তিরস্কার করতে থাকে। গ্রাহকরা আরো জানান, অতিরিক্ত টাকা দিলে অফিস থেকে পরিদর্শন ছাড়াই মিটার সংযোগ সম্পন্ন হয়ে যায়- এ যেন যাদুর মতো। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গ্রাহক জানান, অফিস স্টাফদের কারিশমায় অনেক সম্ভবকে তারা অসম্ভব করেন আবার অসম্ভবকে সম্ভবও করেন। তিনি জানান, অফিস কর্মকর্তার নিজেস্ব লোক নিয়োগ দেওয়া থাকে সে সব নির্দিষ্ট লোকদের মাধ্যমে অফিসে গেলে কাজ ঠিকই পানির মতো সহজ হয়ে যায়। তবে এ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। এতো গেল দালালদের সাথে কর্মকর্তাদের যোগসাজশের কথা। স্থানীয় গ্রাহকরা আরো অভিযোগ করেন অফিসে যে কোন কাজে এলে গ্রাহকদের সাথে কোন কথা বলার সময় থাকেনা। এক্ষেত্রে জানতে চাওয়া হলে অফিসের লোক জন বলেন, অফিসে যত লোক থাকার দরকার তারা সব সময় থাকেন না। গ্রাহকরা জানান, অফিসের লোকজন ৪ জন দালাল নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন, তারা হলেন, তেরাইল গ্রামের জাব্বার, কাজিপুর গ্রামের আরিফ করমদী গ্রামের বাবুল ও রামদেবপুর গ্রামের আজাদ। তবে অফিসে এদের সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে হরিদাশ পাল জানান, ওদেরকে আমাদের অফিস থেকে ট্রেইনিং দেওয়া হয়েছে যাতে তারা ইলেক্ট্রিকের ছোট খাটো কাজ গুলো করতে পারে দ্রুৃত সংযোগ লাগানোর জন্য। তবে এলাকার লোক জন তাদের দালাল বলেই জানে। স্থানীয় গ্রাহকদের অভিযোগ ডিজিএম টেকনিক্যাল থাকলেও আমরা এখনও তার কোন স্বাক্ষাত পায়নি বা তাকে দেখতে পাওয়া যায়না। এ বিষয়ে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত ডিজিএম টেকনিক্যাল প্রদিপ কুমার পাল এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ এলাকায় নতুন এবং অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালন করছি। আমাকে একাই ৭ টি অফিসে কাজ করতে হয়। যে কারণে অনেক সময় অফিসে যেতে হয়তো দেরি হতে পারে। এটা দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে। তিনি অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করতে সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন। গ্রাহকদের অভিযোগ অফিসের এই কর্মকর্তা ঠিক মতো না আসার কারণেও আমাদের সংযোগ পেতে দেরি হয়। তাছাড়া অতিরিক্ত টাকা দিলে সংযোগ পেতে দেরি হয়না- এ কারিশমা চলে বামন্দী সাব জোনাল অফিসে।