গাংনীর পল্লীতে দর্জি এখন চিকিৎসক :
মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাষ্টাদহ গ্রামে একজনই মাত্র চিকিৎসক আছেন যিনি এর আগে দর্জি ছিলেন। অবশ্য এখনও তিনি চিকিৎসা সেবার পাশা পাশি দর্জির কাজও করেন বলে জানান পল্লী চিকিৎসক কাষ্টাদহ গ্রামের খাইরুল ইসলাম। তিনি ঐ গ্রামের মাঝ পাড়ার মৃত ওয়াছেল মন্ডলের ছেলে। ১০ বছর ধরে গ্রামের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন বলে তিনি জানান। এর আগে তিনি পুরুদস্তর দর্জির কাজ করতেন। গ্রামে দর্জির কাজ করে তেমন একটা স্বচ্ছলতা আনতে পারেননি যে কারণে তিনি এই পেশাটাকে এখন প্রাধান্য দিয়েছেন। যদিও তার প্রতিষ্ঠানে এখনও মাঝে মাঝে দর্জির কাজ করেন। ১০ বছর ধরে চিকিৎসা সহ ওষুধ বিক্রি করলেও তিনি এখন থেকে চার বছর আগে একটি পল্লী চিকিৎসার সার্টিফিকেট (এল এম এ এফ পি) নিয়েছেন বলে জানান। খাইরুল ইসলাম নিজেকে ডাক্তার মানতে নারাজ হলেও গ্রামের সকলে তাকে ডাক্তার হিসেবে জানে। চিকিৎসা বিষয়ে কয়েকটি অতি সাধারণ প্রশ্ন করলেও তিনি তা জানেন না বলে এসব বিষয় এড়িয়ে যেতে সাংবাদিকদের অুনরোধ করেন। তিনি বলেন আমাদের গ্রামে কোন চিকিৎসক না থাকায় আমার মেয়ের জ্বর আসলে সেদিন সারারাত চিকিৎসক এবং ওষুধের অভাবে তাকে অনেক কষ্ট পেতে হয়েছে। পরের দিন ভোরে গাংনীর একটি ওষুধের দোকানিকে বললে তিনি ওষুধ দিয়ে দেন তাতে আমার মেয়ের অসুখ ভালো হয়ে যায়। মুলোত এটা তার মাথায় আসে যে গ্রামে কোন চিকিৎসক নেই তাই তিনি স্বিদ্ধান্ত নেন দর্জির পাশা পাশি ওষুধ ও সাধারণ চিকিৎসা করলে মন্দ হয়না। সেই থেকে তিনি শুরু করে দেন ওষুধ ও চিকিৎসার ব্যাবসা। তিনি শিশু থেকে যে কোন বয়সের মানুষকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। নিয়ামনুযায়ি ওষুধ বিক্রি করতে হলে ৬ মাসের ফার্মাসিস্ট ট্রেইুনিং ও ড্রাগ লাইসেন্স থাকা আবশ্যিক যা খাইরুল ইসলামের কাছে নাই। ১৯৯১ সালে তিনি এস এস সি মানবিকে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেন বলে দাবি করেন। পরে তিনি নিজের গ্রামে দর্জির কাজ শুরু করেন এবং পাশাপাশি ওষুধ তার পর চিকিৎসা দিয়ে থাকেন বলে খাইরুল ইসলাম স্বীকার করেন। তিনি তার দোকানে সব ধরণের ওষুধ রাখেন যার মধ্যে উচ্চ মানের এন্টিবায়োটিক, আইভি স্যালাইনও থাকে বলে জানান এবং এগুলোর ব্যাবস্থা পত্র তিনি নিজেই দিয়ে থাকেন এবং বিক্রি করেন। তবে তিনি বড় ধরণের চিকিৎসা দেননা বলে জানান। দর্জির দোকানে ওষুধের ব্যবসা করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন রাখা উচিৎ নয় বলে জানি তার পরও গ্রামে কোন চিকিৎসক ও ওষুধের দোকান নেই বিধায় আমার দোকানে ওষুধ ব্যবসা শুরু করেছি। এ প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের পত্রিকায় প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন। এবং বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাপ শুরু করেন। দৌড় ঝাপে কাজ না হলে তিনি এ ব্যবসা আর করবেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। এবিষয়ে গাংনী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ মাহাবুবুর রহমান বলেন দর্জির দোকানে ওষুধ রাখা ঠিক নয় তাছাড়া পল্লীতে চিকিৎসা দিতে হলে সরকার কর্তৃক ট্রেনিং শেষে একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হয় যাতে সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে পারে। তবে কেউ যদি প্রশিক্ষণ না নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে থাকে তাহলে স্বাস্থ্য ঝুকিতে পড়তে পারে। এ বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।