নবাবগঞ্জে আলুর মড়ক আতঙ্কে দিশেহারা কৃষক
এম এ সাজেদুল ইসলাম(সাগর) নবাবগঞ্জ(দিনাজপুর)প্রতিনিধি
কৃষি প্রধানদেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রায় ৮৫% মানুষ কৃষির উপর নির্ভর শীল। বাংলাদেশ “ব” আকৃতির দ্বীপ হওয়ায় দিনাজপুরের মাটি অত্যন্ত উর্বর। এরই ধারা বাহিকতায় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা আশা করে অনেক কৃষক আলু চাষে ঝুকে পড়লেও বৈরি আবহাওয়া ঘন কুয়াশা শৈত্য প্রবাহের কারনে শীতের তীব্রতা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় আলু চাষে লোকসান গুনতে হবে ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে আলু চাষীরা।
বালাইনাশক ডিলার মোঃ নুরননবী মোস্তফা বলেন, এবারে অতিরিক্ত ঠান্ডা হওয়ায় শীত কালীন সবজীর বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আমরা বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর বিভিন্ন রকমের ঔষধ কৃষকদের দিচ্ছি কিন্তু ফলাফল খুব একটা ভালো পাওয়া যাচ্ছে না।
এ ব্যপারে আলু চাষী মোঃ আনোয়ার হোসেন জানায়, ভাই গত ৫/৬দিন ধরে প্রতিদিন আলুর ক্ষেতে নিয়মিত ওষুধ দিচ্ছি কিন্তু কোন কাজই হচ্ছেনা। আলুর ক্ষেতের অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে। নুরনবী নুহু জানায়, বাজারে যে সমস্ত কীটনাশক এবং আলুর মড়ক রোগের ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে সেগুলি নকল কিনা বোঝা না গেলেও ওষুধে কাজ না হওয়ায় ভাবনায় পড়েছে অনেকেই।
কৃষক তোতা মিয়া জানায়, নবাবগঞ্জ কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কোন পরামর্শ পেলে ভালো হতো। আসলে আমরা সারাদিন মাঠে থাকি বলে কৃষি অফিসে যেতে পারিনা। কৃষি অফিসের কোন লোকও আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়না।
এদিকে মালদহ গ্রামের সিরাজুল ইসলাম জানায়, আমার ৬বিঘা জমিতে ডায়মন্ড জাতের আলু ক্ষেতে শীতজনিত মড়ক দেখা দেওয়ায় প্রায় প্রতিদিন ওষুধ দিতে হচ্ছে। ঐ গ্রামের ইউসুফ আলী জানায়, ভাই আমি এবারে শেষ হয়ে গেলাম। আমার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে সমানে পচন রোগ ধরেছে। প্রতিকার করতে পারছিনা।
উত্তর মুরাদপুর গ্রামের আলু চাষী মোঃ আব্দুল হানিফ জানান প্রতিদিনের ন্যায় আজও আলু ক্ষেতে বালাইনাশক(পচন রোধক) স্প্রে করছি। আমি এ বছর ৩বিঘা মাটিতে আলু চাষ করেছি।
আলুর মড়কসহ অন্যান্য রোগ বালাই সম্পর্কে নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামানের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এবারে আমাদের নবাবগঞ্জে ১ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ মাত্রা নির্ধারন করে আলু চাষ করা হয়েছিল। তার মধ্যে প্রায় ১৮০ হেক্টর জমির আলু ইতি মধ্যেই উঠে গেছে। বর্তমানে প্রচন্ড ঠান্ডা এবং ঘন কুয়াশার কারনে সৃষ্ট প্রাকৃতিক বালাই আলুর মড়ক রোগ বৃদ্ধি পায়। এতে আমরা কৃষকদেরকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি- যেমন সকাল বেলা আলু ক্ষেতের কুয়াশা দড়ি অথবা বাশের লম্বা কঞ্চি দিয়ে আলু গাছ থেকে কুয়াশা ফেলানোর । পাশাপাশি আরো বলতেছি বিভিন্ন কোম্পানির বালাই নাশক ব্যবহার করার। এতে হয়তবা কিছুটা কৃষক উপকৃত হতে পারে।