টাকা ছাড়া মেলে না বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড কুষ্টিয়ার বটতৈল ইউনিয়নে মহিলা মেম্বারের দাপটে বিধবার সন্তানকে পিটিয়ে জখম
কুষ্টিয়া সংবাদদাতা : সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বিশেষ বরাদ্দের বিধবা ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েও কার্ড না করে দেওয়া প্রতিবাদ করায় এক যুবককে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। আহত অবস্থায় ঐ যুবককে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে সে হাসপাতালের ১০ নং সার্জারী বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত ঐ যুবকের নাম সাত্তার। সে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা বটতৈল ইউনিয়নের বটতৈল ঈদগাহ পাড়ার মৃত: নেকবার মুন্সীর ছেলে। গতকাল কিছু মিডিয়ায় এবং সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ফেসবুকের পেজে 'টাকা দিয়েও বিধবা ভাতার কার্ড মেলেনি ফুলজান নেছার' এমন সংবাদ প্রকাশ হলে ক্ষিপ্ত হয়ে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের অভিযুক্ত মহিলা মেম্বার সাত্তারের পরিবারকে হুমকিধামকি দেয় এবং চাপ প্রয়োগ করে ইন্ধন দিয়ে তাকে মারধোর করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিধবা ও বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়া হবে বলে অনেকের কাছ থেকে ১ থেকে ৩ হাজার টাকা অগ্রীম নিয়েছে কার্ড করে দেকে বলে বটতৈল ইউনিয়ন পরিষদের ৪,৫ ও ৬ নং সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য (মে¤॥^ার) শিল্পী খাতুনের বিরুদ্ধে। এর আগে গত বুধবার রাতে মেম্বারের বাড়ীতে এক শালিসী বৈঠকে উপস্থিত হয়ে সকলের অনুমতি নিয়ে সাত্তার বলেন, আমার মায়ের কাছ থেকে শিল্পী মে¤॥^ার কার্ড করে দেবে বলে দুই হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু আজও সেটি দেয়নি। এমন কথা বলা মাত্রই শিল্পী মে¤॥^ারের নির্দেশে তার স্বামীসহ তার লোকজন সাত্তারকে বেধড়ক মারপিট করে। সেই সালিশী বৈঠকে উপস্থিত থাকা একাধীক ব্যক্তি জানান, সেখানে স্থানীয় আওয়ামীলীগের সভাপতি মিজানুর রহমানে উপস্থিতিতে সাত্তারকে মারপিট করে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয়। সাত্তার সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমার মায়ের কাছ থেকে ২ হাজার টাকা নিয়ে বিধবা ভাতার কার্ড করে দেবে। কিন্তু দীর্ঘদিন পেিেরয় গেলেও কার্ড না পাওয়ায় টাকা ফেরত চাইতে গেলে ঐ ইউপি সদস্য ও তার লোকজন দিয়ে আমাকে মারধোর করে। পরে বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে আমাকে জঙ্গী বলে পুলিশকে দিয়ে ধরিয়ে দেওয়ারও হুমকি দিতে থাকেন। এসব ঘটনায় আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তহীনতায় ভুগছি।এমন ঘটনার পর আবার শনিবার রাতে তাকে মারধোরের ঘটনা ঘটে। এঘটনায় এখনো নিরাপত্তহীনতায় ভুগছে বিধবা ফুলজান নেছা ও তার ছেলে। এদিকে গতকাল শনিবার বিকেলে বটতৈল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গেলে বেরিয়ে আসে থলের বেড়াল। অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে বিধবা, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী এমনকি গর্ভবতী মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়ার কথা বলেও টাকা নিয়েছে। কিন্তু বছর পেরিয়ে গেলেও তাদের কোন ভাতার কার্ড করে দেওয়া হয়নি। ৮১ বছরের বৃদ্ধ কবুরহাট কদমতলা এলাকার দরিদ্র সুরত আলী মল্লিক।মাঠে মাঠে ধান কুড়িয়ে কোন ভাবে বেঁচে আছেন। বয়স্ক ভাতার কার্ডকরে দেবে বলে ২ বছর আগে মহিলা মে¤॥^ার শিল্পী খাতুন ১ হাজার টাকা নিয়ে আজও কার্ড করে দেয়নি।তার কাছে ঘুরে ঘুরে এখন বড্ড ক্লান্ত সে। তাই অভিমানের সুরেই বলেন দুই হাজার টাকা মে¤॥^ারকে ভিক্ষা দিলাম। শুকতারা নামের এক দরিদ্র মাকে গর্ভকালীনসময় ভাতা প্রদানের কথা বলে এক হাজার নেয়। দুইবছরে বারো হাজার টাকা পাওয়ার আশায় অসহায় দারিদ্র ভ্যানচালকের স্ত্রী শুকতারার কাছ থেকে এক হাজার টাকা গ্রহণ করে শিল্পী মে¤॥^ার কিন্তু বাচ্চার বয়স ৭মাস পেরিয়ে গেলেও পায়নি মাতৃত্ব ভাতার কার্ড। শুকতারা জানান, মে¤॥^ারের কাছে গেলে বলে সন্তান বড় হোক টাকা পাবে। এমনও আরও অনেকেই অভিযোগ তোলেন ঐ মেম্বারের বিরুদ্ধে। এসব ঘটনার পর প্রশাসন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এ ব্যাপারে বটতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোমিন মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ ধরনের অভিযোগ আমার কাছে কেউ করেনি। তবে স্থানীয় আন্দোলনের বাজার পত্রিকায় সংবাদ দেখে বিষয়টা জানতে পেরেছি। তবে এর আগে গ্রাম্য এক মাতব্বরের কাছ থেকে শিল্পী খাতুন মেম্বারের বিরুদ্ধে এমন কথা শুনলেও কেউ অভিযোগ না করায় তা আমলে নিতে পারিনি। তবে আগামীকাল(রোববার) সকাল ১১টায় ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্যদের নিয়ে জরুরী মিটিং ডেকেছি বলেও জানান তিনি।