কালীগঞ্জে পরিবেশ দূষণে কীর্তন পন্ড হওয়ার উপক্রম, ভক্তরা অসুস্থ !
লোকমান হোসেন পনির, কালীগঞ্জ(গাজীপুর)
গাজীপুরের কালীগঞ্জে শুকরের বর্জ্যের দুর্গন্ধে তারকব্রক্ষ মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান কীর্তন পন্ড হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ধুপ ও আগরবাতি জ¦ালিয়েও দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাচ্ছে না আগত ভক্তবৃন্দরা। দুর্গন্ধ সইতে না পেরে অনেক ভক্ত অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নাগরী ইউনিয়নের করান গ্রামের সুজাপুর এলাকায় মহাশ্মশান কালী মন্দিরে পরিবেশ বিপর্যয়ের ঘটনাটি ঘটেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শনিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ১২তম বার্ষিকী ২৪ প্রহর ব্যাপি শ্রী শ্রী তারকব্রক্ষ মহানামা যজ্ঞানুষ্ঠান সুজাপুর কালীমন্দিরে শুরু হয়েছে। মহাশ্মশান কালী মন্দিরের পার্শে নাগরী ইউপি সদস্য অরুন রোজারিওর শুকর লালন-পালন ও বিক্রয় ফার্ম রয়েছে। অপরিকল্পিত ওই ফার্ম থেকে নির্গত বর্জ্য একটি ধানক্ষেতে জমে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়ে তা আশেপাশে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশ দূষণ করেছে। লোকজনসহ এলাকাবাসী নাকে রুমাল চেপে ওই এলাকা পার হতে দেখা যায়। বর্জ্য অপসারণ পূর্বক পরিবেশ দূষণমুক্ত করার নির্দেশকে কর্নপাত না করে বরং প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শন করছেন ওই শুকর খামারী অরুন রোজারিও।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মুশফিকুর রহমান অভিযুক্ত মৃত ফিলিপ রোজারিওর পুত্র অরুন রোজারিওকে ডেকে বিকেলের মধ্যে বর্জ্য দুর্গন্ধ রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে মোবাইলকোর্ট করতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ সোহাগ হোসেনকে নির্দেশ দেয়া হয়।
এ বিষয়ে নাগরী ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি আলি হোসেন বলেন, অরুন মেম্বারকে এক মাস পূর্বে থেকে বলে যাচ্ছি সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে, একটি বিহিত করতে। কিন্ত সে তা করেনি এবং মোবাইলও রিসিভ করছে না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বৃন্দাবন চন্দ্র দাস তিনি বলেন, আমরা ইউএনও সারের নিকট মৌখিক অভিযোগ দেয়ার পর তিনি নাগরী ইউনিয়ন চেয়ারম্যনকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্ত তাতে কোন ফলাফল হয়নি।
সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চন্দ্র রায় বলেন, ২৪ প্রহরব্যাপি অনুষ্ঠানে আগত হাজার হাজার ভক্তরা শুকরের বর্জ্যের দুর্গন্ধে বমি করছে, প্রসাদ নিতে পারছে না। তারা হিন্দু ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পরিবেশ দূষণ করে রেখেছে।
তুমুলিয়া ৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফালান মন্ডল বলেন, দুর্গন্ধের কারনে আমি অনুষ্ঠানে এসে বসতে পারছিনা, হাজারো ভক্তের সমস্যা সৃষ্টিকারীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেয়ার প্রয়োজন। শুধু এই অনুষ্ঠান না, দূর্গন্ধের কারনে নাগরী-নলছাটা সড়ক দিয়ে কেউই যাতায়াত করতে পারছে না।
বাউল আশ্রমের সভাপতি সহকারী ইনকামটেক্স কমিশনার চিত্ত রঞ্জন দাস (অবঃ) বলেন, এখানে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে প্রশাসনে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, পরিবেশ দূষণমুক্ত করার দাবি জানাই।
অভিযুক্ত অরুন রোজারিওর ( মেম্বার) সাথে ফোনে কথা বললে তিনি পরিবেশ দূষণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি এখন একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছি, আমি কেরোসিন,ব্লিসিং পাউডার দিয়েছি গন্ধ যায় না। আমি হাউজ বানাইতাছি । একমাস পুর্বে জানানোর পর কেন ব্যবস্থা নিতে বিলম্বে হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে কে বলেছে।
শ্রী গৌরাঙ্গ সম্প্রদায় (খুলনা), শ্রী বন্ধু বিহারী সম্প্রদায়(বরিশাল), শ্রী গৌর সুন্দর সম্প্রদায়(খুলনা), শ্রী বেদবাণী সম্প্রদায়(কুমিল্লা), শ্রী মিরার প্রভুতি সম্প্রদায়(লক্ষীপুর), শ্রী দেব দূর্গা সম্প্রদায় (খুলনা) অনুষ্ঠানে লীলা রস, হরিনামা পরিবেশন করছেন