জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আজিজার রহমান স্থানীয় ভাবে স্বীকৃতি পেলেও পায়নি জাতীয় কোন স্বীকৃতি
মোস্তাকিম হোসেন,জয়পুরহাটঃ
৫২’এর ভাষা আন্দোলনে জয়পুরহাটে যে ক’জন গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখেছিলেন তাদেরই একজন ভাষা সংগ্রামী ডাঃ আজিজার রহমান। ভাষা সংগ্রামের কয়েক যুগ পার হলেও ভাষা সংগ্রামে যাওয়ার উদ্দেশ্য আজো পুরুন হয়নি তার। শুধু ভাষা সৈনিক হিসাবে নয়, মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক হিসাবে জাতির জন্য যা চাওয়া তাও পুরুন হয়নি আজো। এই বীর সৈনিক জাতীয় ভাবে পায়নি কোন স্বীকৃতি। এমনকি স্বাধীনতার এত বছর পরও পায়নি কোন মুক্তিযোদ্ধার সনদপত্র।
৮৫ বছর বয়সের সদালাপী আর হাস্যোজ্জল এই মানুষটিই ভাষা সংগ্রামী ডাঃ আজিজার রহমান। জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামে এখন তার সময় কাটে শুধু পত্র-পত্রিকা, সাহিত্য, উপন্যাস আর বই পড়ে।
ভাষা সংগ্রামী ডাঃ আজিজার রহমান বলেন, ১৯৫২’ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় মাতৃভাষার প্রতি পাকিস্তানিদের যে আঘাত আর বাংলা ভাষার প্রতি অকৃত্তিম মমত্ব বোধ থেকেই তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন ভাষা আন্দোলনে। অনেক প্রত্যাশা আর উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি ভাষা সংগ্রামে যোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু তার প্রাপ্তির ঝুলি এখনও অনেকটাই শূন্য।
ভাষা সংগ্রামী ডাঃ আজিজার রহমান জানান, বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেও এর যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না এখনো। অপ-সংস্কৃতির কবলে পড়ে হারিয়ে যেতে চলেছে বাংলা ভাষার গৌরব। তবুও আশা ছাড়েননি তিনি।
শুধু ভাষা আন্দোলন নয়, ৭১এর মুক্তিযোদ্ধা আর মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠকও ছিলেন তিনি। তবে দেশ স্বাধীনতা লাভ করলেও তার মতে এখনো অর্থনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করা সম্ভব হয়নি।
স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ভাষা সৈনিক হিসাবে স্থানীয় কিছু সম্মাননা পেলেও এখনো জাতীয়ভাবে কোন স্বীকৃতি মেলেনি তার। এই ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধার কপালে অর্থাভাবে আজো জোটেনি কোন মুক্তিযোদ্ধার সনদ।
ভাষা সংগ্রামী ডাঃ আজিজার রহমানের ছেলে উজ্জল হোসেন জানান, ডাঃ আজিজার রহমান যেন জীবদ্দশায় ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি পায় এখন এই একটায় দাবী তাদের পরিবারের সদস্যদের।
দেশের মানুষের অর্থনৈতিক ও সামজিক মুক্তির আশা নিয়ে যে ভাষা আন্দোলন আর মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, তার সে আশা পুরুন হবে এমন প্রত্যাশা হোক সকলের।