নানামুখি সংকটে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে চট্টগ্রামের অ্যালুমিনিয়াম শিল্প। গত ১০ বছরে বন্ধ হয়ে গেছে প্রায় অর্ধশত কারখানা। গ্যাস বিদ্যুতের সংকট ও জমির মুল্য বৃদ্ধিকেই মূল সংকট হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। কাঁচামালের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারসহ সহজ শর্তে ব্যংকঋণ ও শহরের কাছাকাছি সরকারি তত্ত্বাবধানে নতুন শিল্পপ্লটের ব্যবস্থা করা গেলে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সম্ভাবনাময় এই কুটির শিল্পটি। এতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানীর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে চীনের পাশাপাশি অবস্থান করে নেয়া সম্ভব বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।

মুরাদপুরের অ্যালুমিনিয়াম শিল্প এলাকায় তৈজসপত্র বানানোর টুংটাং শব্দ এখন দিন দিন কমে আসছে। কারণ গেল ৮ বছরে প্রায় অর্ধশত কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধের পথে আরো অন্তত ২০টি। জমির মালিকরা ইতিমধ্যে তাদের উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছে। ৭০ বছর আগে গড়ে ওঠা এই ক্ষুদ্র শিল্প এলাকাটি এখন আবাসিক এলাকায় পরিণত হয়েছে। তাই কারখানার বদলে এখন বহুতল ভবনেই বেশি আগ্রহী জমির মালিকরা। ব্যবসায়ীরা জানান, ২০১০ সালেও ছোট-বড় মিলিয়ে এই এলাকায় অ্যালুমিনিয়ামের কারখানা ছিলো প্রায় ১৭০টি। আর এখন আছে ১২০টি। উচ্ছেদ হওয়া মালিকদের কয়েকজন বাইরে জমি পেলেও মিলছে না গ্যাস সংযোগ।

জমির পাশাপাশি গ্যাস ও বিদ্যুত সংকটও প্রকট। তাই এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে আমদানীকরা কাঁচামালের ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের পাশাপশি সরকারিভাবে শিল্পপ্লট বরাদ্দের দাবি জানান ব্যবসায়ী নেতারা। প্রতিবছর প্রায় এক হাজার কোটি টাকার অ্যালুমিনিয়ামের তৈরী তৈজসপত্রের চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশে। যার প্রায় ৩০ শতাংশই সরবরাহ করা হয় চট্টগ্রাম থেকে। এছাড়া সম্প্রতি মিয়ানমারে রপ্তানি শুরু হওয়া অ্যালুমিনিয়ামের তৈজসপত্রের প্রায় ৮০ ভাগই চট্টগ্রামের ওপর নির্ভবশীল।