আদিতমারী হাসপাতালে পথ্য সরবরাহ কাজে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম
আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাটঃ
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রোগীদের পথ্য সামগ্রী সরবরাহ কাজে ঠিকাদার নিয়োগে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দরপত্রের শর্তাবলী মোতাবেক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলকারী ও নি¤œ দরদাতা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ না দিয়ে অনৈতিকভাবে অসম্পন্ন কাগজপত্র দাখিল করা উচ্চ দরদাতা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে। এতে সরকারের আর্থিক অপচয় সাধন করে লালমনিরহাট সিভিল সার্জন কাশেম আলী নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়েছেন বলে বঞ্চিত ঠিকাদাররা অভিযোগ তুলেছেন। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে উচ্চ আদালতে এক ঠিকাদার মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ওই হাসপাতালের পথ্য সামগ্রী সরবরাহের জন্য গত ২৫ জানুয়ারী একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় পুনঃদরপত্র বিজ্ঞপ্তি আহ্বান করা হয়। এতে ছয়টি দরপত্র দাখিল করে ঠিকাদারগণ। ৭ ফেব্রুয়ারী লালমনিরহাট সিভিল সার্জেন কার্যালয়ে দরপত্র বাছাই করা হলে বাছাইয়ে অসম্পন্ন কাগজপত্র দেখিয়ে মেসার্স টিটন কনস্ট্রাকশন ও স্থিতি না থাকায় মেসার্স আবদুর রাজ্জাক লেবু নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। অবশিষ্ট মেসার্স আদেল ট্রেডার্স, আবু বক্কর সিদ্দিক, মাহবুবুল হক, জমশেদ আলী এই চার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বনি¤œ দরদাতা দেখিয়ে আদিতমারী উপজেলা ছাত্রদলের সা.সম্পাদক মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিককে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী কার্যাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু দরপত্রের শর্তাবলী অনুযায়ী কাজ পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে সর্বনি¤œ ৫০হাজার টাকা স্থিতি থাকার বিধান থাকলেও সেখানে ওই সময় মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিকের স্থিতি ছিল মাত্র ৮শ ১৫ টাকা। এমনকি দরপত্র দাখিলের সময় স্থিতির কাগজও ছিল না তার। এরপরও অনৈতিক সুবিধা আদায় ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়ম বর্হিভূতভাবে সিভিল সার্জন কাশেম আলী তাকে কাজ বাগিয়ে দিয়েছেন বলে একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন।
কাজ বঞ্চিত ঠিকাদার মেসার্স আদেল ট্রেডার্সের প্রোপাইটর মোঃ খায়রুজ্জামান অভিযোগ করে বলেন, দরপত্রের শর্তাবলী অনুযায়ী কেবল মাত্র আদেল ট্রেডার্স যাবতীয় কাগজপত্র দাখিল করেছিলো। অন্যান্য সব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র অসম্পন্ন থাকলেও দুটি প্রতিষ্ঠানকে বাতিল করে সর্বনি¤œ দরদাতা দেখিয়ে আবু বক্কর সিদ্দিক নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়। যা সম্পূন্নরুপে নিয়ম বর্হিভূত। বিষয়টি নিয়ে তিনি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ নবিউর রহমান রহমানের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে বলেন, টেন্ডার ড্রপিংয়ে এসব কমন (সাধারণ) অভিযোগ। আমরা সব নিয়ম অনুসরণ করেই দরপত্র সম্পন্ন করেছি। এরপরেও কারো কোন অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডাঃ কাশেম আলী বলেন, বাছাইয়ে যার কাগজপত্র সঠিক ছিল এবং সর্বনি¤œ দরদাতা যিনি তাকেই কাজ দেয়া হয়েছে। বিষয়টিতে কোন ধরণের অনিময় ও দুর্নীতি হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।