মুন্সীগন্জ জেলার আলু আবদী জমি থেকে আলু উত্তোলনে মাঠে নেমেছে কৃষকরা
লিটন মাহমুদ মুন্সীগন্জ , আলুর জন্য বিখ্যাত মুন্সীগঞ্জ জেলায় পুরোদমে শুরু হয়েছে এ বছরের আলু উত্তোলন। জেলার আলু আবদী জমি থেকে আলু উত্তোলনে মাঠে নেমেছে কৃষকরা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ পর্যন্ত ৮ হাজার হেক্টর জমির আলু উত্তোলন সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আলু উত্তোলনকারী শ্রমিকরাও মাঠে রয়েছে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় আলুর আকার ও ফলন ভালো হলেও জমিতে পাইকার না থাকায় খরচ পুশিয়ে লাভ পেতে শঙ্কায় রয়েছে তারা।
সরজমিনে জেলার সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি, বাংলাবাজার, আধারা, টঙ্গীবাড়ী উপজেলার যশলং, দিঘীরপাড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, সর্বত্র জমিতে আলু উত্তোলনে মাঠে রয়েছে কৃষকরা। টঙ্গীবাড়ী উপজেলা কাঠাদিয়া এলাকায় ১০ একর জমিতে আলু রোপন করেছিলেন কৃষক আলমাস সিকদার। তিনি জানান, এবছর প্রতি একরে ৩ শত থেকে ৩৫০মণ আলু হয়েছে। আলুর ফলন ভাল হয়েছে তবে তেমন কোন পাইকার এখনো জমিতে আসছে না। আরেক কৃষক নরুল আলম জানান, প্রতি একর আলুতে সর্বমোট ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে, অল্প কিছু আলু ৭-৮টাকা কেজি ধরে বিক্রি করতে পেরেছি। গত বছর কোল্ডস্টোরে আলু রেখে লোকসান হয়েছে। আলু উত্তোলনে শ্রমিকদের গত বছরের চেয়ে এবার বেশি মজুরি দিতে হচ্ছে।
এদিকে মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ জেলায় ডায়মন্ড, কাডিনাল গ্রানালা, হীরাসহ ১১জাতের আলু চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে ৯০ ভাগই ডায়মন্ড আলু চাষ হয়। এ বছর জেলায় ৩৮ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ লক্ষ ৫৮ হাজার মেট্রিক টন। এর আগে রোপন মৌসুমে ডিসেম্বরের কয়েকদিন বৃষ্টির কবলে পড়ে রোপনকৃত ১১ শত হেক্টর জমির আলু। পিছিয়ে যায় ১৪ হাজার ৪শত হেক্টর জমির আলুর রোপন। তবে বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে রোপনকৃত আলু নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করা হলেও তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। আর বৃষ্টির আগে রোপনকৃত জমিতে বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের আর পানি দিতে হয়নি। বৃষ্টি পেয়ে রোপনকৃত আলুর গাছ দ্রুত বেড়ে ওঠে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মুন্সীগঞ্জ উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. হুমায়ূন কবীর জানান, কৃষকরা আলু উত্তোলন শুরু করেছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর ফলন খুব ভালো হয়েছে। এ বছর আলুর জমিতে কোন ধরনের রোগ বালাই দেখা দেয়নি। আশা করছি পাইকাররা দ্রুত জমিতে চলে আসবে, কৃষকরা এবছর আলু বিক্রি করে লাভবান হবে।