ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর দুই তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চাই স্থায়ী সমাধান.
ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর দুই তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে প্রতিবছরই ভাঙন দেখা দেয়। বন্যার কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হতে হয় সেখানকার তিনটি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষকে। বন্যার পর ত্রাণের নামে সহায়তা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন দুর্গতদের পাশে দাঁড়ালেও এলাকাবাসীর দাবি ত্রাণ নয়, তারা চান স্থায়ী সমাধান। জেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধের নির্মাণ ত্রুটির কথা স্বীকার করে প্রতিবছরের মতো এবারও সমাধানের আশ্বাস দেন।ভারতের ত্রিপুরা থেকে পাহাড়ি ঢল সে সাথে ভারী বর্ষণ হলেই ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে দেখা দেয় ভাঙন। প্রতি বছর এই বাঁধের বিভিন্ন স্থান ভেঙে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলের মাঠসহ ভেসে যায় পুকুরের মাছও। এ বছরও ১৮টি স্থান ভেঙে বন্যার কবলে পড়েছে ৩০টি গ্রাম।
অথচ ফেনীর সদরসহ ফুলগাজী,পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলাকে বন্যা থেকে রক্ষায় ২০০৫ সালে শুরু হয়ে ২০১১ সালে নির্মিত হয়েছে ১’শ ২২ কিলোমিটার বন্যা প্রতিরক্ষা এই বাঁধটি। কিন্তু নির্মাণের পর থেকে আশীর্বাদ নয়, প্রতি বছরই একাধিকার এই বাঁধের একাধিক স্থানে ভেঙে অভিশাপই বয়ে আনছে স্থানীয়দের জন্যে। নদী শাসন না করা, নদী থেকে অপরিকল্পিল্পভাবে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি নদীর তীর ঘেঁষে বেশির ভাগ বাঁধ নির্মাণ হওয়াকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা ।
স্থানীয়রা বলেন, আগে যা ভাঙা ছিল, এখন আরো ভেঙেছে। তাই এই অবস্থায় আমরা আতঙ্কে আছি।'
বাঁধের নির্মাণ ত্রুটির কথা স্বীকার করে ফেনীর জেলা প্রশাসক জানান, ফেনীর মানুষের দুঃখের অন্যতম এ বিষয়টির স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।
ফেনী জেলা প্রশাসক মনোজ কুমার রায় বলেন, 'স্থায়ী সমাধান চাই। প্রতিবছর এই সমস্যা আমরা আর চাই না।'
গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর এই বাঁধের পুনর্নির্মাণে ২’শ ৩৭ কোটি টাকার আনুমানিক বাজেট দিয়ে একটি কারিগরি প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানায়,পানি উন্নয়ন বোর্ড।ফেনী বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কোহিনুর আলম বলেন, 'পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে আমাদের নির্দেশ আছে, এটা নিয়ে আমাদের ভাবা হচ্ছে।'
এই নদীর দু’তীরে ১’শ ২২ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মধ্যে ৭৫ কিলোমিটার রয়েছে নদীর খুব তীরবর্তী। যা এই বাঁধ ভাঙ্গার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছে ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ড। স্থানীয়দের দাবী এই বাঁধকে নদী থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নেয়ার।