গাংনীতে ষড়যন্ত্রমূলক জমি খারিজের অভিযোগে এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন
বিশেষ প্রতিনিধি 4TV : মেহেরপুর গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) (এসিল্যান্ড) বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে নামজারী (খারিজ) করার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পূর্ব মালসাদহ গ্রামের মিজানুর রহমান খোকন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে গাংনী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করেন। অভিযোগে মিজানুর রহমান খোকন জানান, তার বড় ছেলে আল কবিরকে ছোটবেলা থেকে মৌখিক পোষ্য নেন তার দুঃসম্পর্কের ফুফাতো ভাই পুর্ব মালসাদহ গ্রামের আব্দুল লতিফ। নিঃসন্তান আব্দুল লতিফ ও তার স্ত্রী হাজেরা খাতুন আল কবিরকে নিজের সন্তান হিসেবে লালন-পালন শুরু করেন। নিজের সন্তান হিসেবে আল কবিরের নামে আব্দুল লতিফ নিজ নামীয় গাংনী মৌজার আর.এস ৫৫৯, ৫৬০, ৫৬১, ৫৬২, ৫৬৩, ৮৯০ ও ৮৯৩ নং খতিয়ানে ৪.৫৫.১২৫ একর সম্পত্তি হেবাবিল এওয়াজ করে দেন ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। গত ২০১৬ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে আল কবির মৃত্যু বরণ করে। সে থেকেই মিজানুর রহমান ওই সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছিলেন। মাস ছয়েক আগে আব্দুল লতিফ মারা যান। সম্প্রতি জমির অংশ দাবি করেন মৃত আব্দুল লতিফের বিমাতা ভাই রাইপুর ইউপির শিমুলতলা গ্রামের মনিরুজ্জামান গং । সেই সাথে নাম পত্তনের (খারিজ) জন্য গাংনী ভূমি অফিসে আবেদন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে চলতি বছরের ৮ মার্চ নাম পত্ত¡ন সম্পন্ন না করার জন্য মিজানুর রহমান খোকন গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেলোয়ার হোসেন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে মেহেরপুর যুগ্ম জেলা জজ আদালত ২ এ দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন তিনি। এছাড়াও জেলা প্রশাসক ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আপত্তি জানানো হয়। সেসময় নাম পত্ত¡ন স্থগিত হলেও পরে আবারো তৎপরতা চালাতে থাকেন মনিরুজ্জামান গং। বিষয়টি জানতে পেরে গত ২০ মে আবারো গাংনী সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর বরাবর লিখিত আবেদন করেন মিজানুর রহমান। এদিকে বিজ্ঞ আদালত দেওয়ানী মামলার প্রেক্ষিতে ৩১ মে ১৫ কার্য দিবসের মধ্যে বিষয়টির কারণ দর্শানোর জন্য গাংনী উপজেলার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আদেশ দেন। বিজ্ঞ আদালতের আদেশটি গত ৩ জুন গ্রহণ করেন গাংনী উপজেলা ভূমি অফিস। আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে ৫ জুন গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাম পত্ত¡ন সম্পন্ন করেন। যার হোল্ডিং নং যথাক্রমে ৫০২৭, ৫০২৯ ও ৫০৩০। নাম পত্ত¡ন( খারিজের) আদেশে সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেলোয়ার হোসেন উল্লেখ করেছেন যে, উভয় পক্ষকে নোটিশের মাধ্যমে ডেকে এনে তাদের শুনানি নেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে উভয় পক্ষ কারা তা সম্পৃষ্ট নয়। সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে খারিজ বা নাম পত্ত¡ন করা হয়েছে। একদিকে সন্তান হারানোর বেদনা অন্যদিকে সম্পত্তি নিয়ে ষড়যন্ত্রে অসহায় হয়ে পড়েছেন বলে দাবী করেন ভুক্তভোগি মিজানুর রহমান। সুবিচার পেতে সংবাদপত্র, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ পরিবেশন ও সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন ইলেক্ট্রীক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন। তবে এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেলোয়ার হোসেনের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।