উলাপাড়ায় দেশীয় পদ্ধতিতে হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন খামার অনেকেরই কাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠছেন
সাহারুল হক সাচ্চু (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি 4TV
সিরাজগঞ্জের উলাপাড়ায় পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস আর নিজ মেধায় আব্দুল হামিদ মোলা স্বাবলম্বি হয়েছেন। নিজ হাতে গড়া হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন খামার তাকে স্বাবলম্বি করেছে। দেশের অনেক এলাকায় পরিচিতি এনে দিয়েছে। তিনি অর্থের সফলতা পেয়েছেন। এক সময় রিক্সা চালক ছিলেন। তিন টিনের ছাপড়া ঘরে বসবাস করেছেন। এখন মোলা হ্যাচারীর মালিক হয়েছেন। আগের সেই ভিটেতেই ছাপড়া বদলে সেখানে পাকা দোতলা ভবন গড়েছেন। তার সাফল্য দেখে এমন খামার গড়তে আগ্রহীদেরকে বিভিন্ন সহযোগীতা “ দিচ্ছেন।
উলাপাড়া উপজেলার ভুতগাছা গ্রামের আব্দুল হামিদ মোলা প্রায় ২২ বছর আগে নিজ আগ্রহে ব্র্যাক থেকে ২৫ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে হাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদনে জড়িত হন বলে জানান। নিজ বাড়ীতেই দেশীয় পদ্ধতিতে ধানের তুষ ও হ্যারিকেনের আলোয় হাসের ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন শুরু করেন। তিনি জানান প্রতি তিনদিন পর ১৮ হাজার ডিম ঢোকানো হয়। একবার ডিম ঢোকানোর ৩০ দিনে তা থেকে বাচ্চা ফুটে বের হয়। সে হিসাবে তার খামারে চক্রাকারে প্রায় দিনই বাচ্চা মেলে। তিনি আরো জানান প্রথম শুরু থেকে বছর চারেক আগ অবধি প্রায় ১৮ বছর কাল পুরোপুরি দেশীয় তুষ পদ্ধতিতে বাচ্চা উৎপাদন করেছেন। এখন তুষ পদ্ধতিসহ নিজ মেধায় তৈরী মেশিন প্রযুক্তিতে বাচ্চা উৎপাদন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বড় ধরনের চারটি মেশিন বসিয়েছেন। একটি মেশিন তৈরীতে প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানান। প্রতিদিন উলাপাড়ার বিভিন্ন এলাকাসহ তাড়াশ, শাহাজাদপুর, সিংড়া, বনপাড়া, বড়াইগ্রাম এলাকা থেকে হাসের ডিম সংগ্রহ করা হয়। তার খামারের উৎপাদিত বাচ্চা ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, বগুড়া, পাবনা, কুষ্টিয়া, বরিশালসহ আরো বেশ কয়টি এলাকার ব্যবসায়ীরা নিজেরাই এসে পাইকারী বাচ্চা কিনে নেয় বলে জানান। বেশির ভাগ ব্যবসায়ী আগাম তাদের চাহিদা জানিয়ে দেয়। তার খামারে নিয়মিত আট জন কাজ করেন। আব্দুল হামিদ মোলা জানান সব মিলিয়ে তার খামারের পেছনে প্রায় ৭০ লাখ পুজি খাটছে। প্রতিমাসে সব খরচ বাদে এক থেকে সোয়া লাখ টাকা তার আয় হয় বলে জানান। তিনি এরই মধ্যে এমন খামার গড়তে আপন ভাইসহ বিভিন্ন এলাকার আগ্রহী আট জনকে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে খামার গড়তে যাবতীয় সহযোগীতা করেছেন।