লালমনিরহাটে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট
আসাদুজ্জামান সাজু, লালমনিরহাট 4TV
লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখন কয়েক হাজার পরিবার পানি বন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। জেলার হাতীবান্ধায় অবস্থিত দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে বিপদ সীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করে। এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেতে থাকে। রাত ৮ টায় দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদ সীমার ১১ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এতে জেলার প্রায় ২২ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ে। জেলায় পানি বন্দি লোকজনের জন্য ২৫ মেঃ টন চাল ত্রাণ হিসাবে বরাদ্দ হলেও তা প্রয়োজন তুলনায় একেবারে নগণ্য। হাতীবান্ধায় পানি বন্দি পরিবার গুলো মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের মাঝে কোন ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি। তবে জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। ভয়ের কোনো কারণ নেই।
তিস্তা ব্যারাজ দোয়ানী পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানা গেছে, ভারত গজল ডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা তীববর্তী এলাকা গুলোতে গত ৬ দিন ধরে বন্যা দেখা দিয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেতে থাকে। রাত ৮ টায় দোয়ানী পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদ সীমার ১১ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এতে জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার প্রায় ২২ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ে। অনেকেই ঘর বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাচ্ছে। প্রচন্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। পানি গতি নিয়ন্ত্রন করতে হাতীবান্ধায় অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেটই খুলে দেয়া হয়েছে। সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের লোকজন। কয়েক হাজার একর আমন ধানের ক্ষেতসহ অনেক ফসলী ক্ষেত তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে। চর এলাকা গুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে তিস্তার পানি কমতে থাকে। এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানি বন্দি অবস্থায় পড়ে আছে বলে জানা গেছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শফিউল আলম রোকন জানান, তার ইউনিয়নে কয়েক হাজার পরিবার পানি বন্দি অবস্থায় পড়ে আছে। চর এলাকা গুলো বিশুদ্ধ পানি ও খাবার তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পানি বন্দি পরিবার গুলোর মাঝে কোন ত্রাণ বা খাবার বিতরণ করা হয়নি।
তিস্তা ব্যরাজ দোয়ানী পানি উন্নয়ন বোর্ড’র নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম চৌধুরী জানান, ভারত গজল ডোবা ব্যারাজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আরও কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারনা যাচ্ছে না। পানি গতি নিয়ন্ত্রন করতে তিস্তা ব্যারেজের অধিকাংশ গেটই খুলে দেয়া হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জানান, জেলায় পানি বন্দি পরিবার গুলোর জন্য প্রাথমিক অবস্থায় ২৫ মেঃ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ত্রাণ বরাদ্দ চেয়ে উচ্চ পর্য়ায়ে তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে।
ছবি ক্যাপশন ঃ
বন্যার পানির চাপে জেলার রাস্তা গুলো ভেঙ্গে গেছে। ছবিটি হাতীবান্ধা উপজেলার সির্ন্দুনা এলাকা থেকে তোলা।