জয়পুরহাট-২ আসনে সকল মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জ প্রার্থী এমপি স্বপন
নিরেন দাস,(জয়পুরহাট) আক্কেলপুর প্রতিনিধি
জয়পুরহাট জেলাধীন মাত্র ২ টি সংসদীয় আসন সংখ্যা। তার মধ্যে আক্কেলপুর,কালাই ও ক্ষেতলাল এই উপজেলা তিনটি উপজেলা নিয়ে গঠিত জয়পুরহাট-২ আসন।
যে আসনটিতে এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বর্তমান ক্ষমতাশালী দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তৃতীয় বারের সাংগঠনিক সম্পাদক,ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের তিন দিনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক, জয়পুরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন.এমপি।
এই শক্তিশালী কেন্দ্রীয় নেতাকে নিয়ে আগামী আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন-১৯ কে সামনে রেখে আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য ও মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা ছাড়া বিএনপি,জাপা,জামায়াত এর একাধিক আশাবাদী মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী থাকলেও কেন্দ্রীয় জাসাসের এক মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা বর্তমান এমপি স্বপন কেই চ্যালেঞ্জ প্রার্থী হিসেবে দেখছেন বলে জানান তিনি।
এ ছাড়া অন্যান্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিরপেক্ষ নির্বাচনের হবে কি না তা ভাবলেও বিএনপির এই মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থী, কেন্দ্রীয় জাসাস এর সহসভাপতি ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক, লায়ন সিরাজুল ইসলাম বিদ্যুৎও বলেন। আগামী নির্বাচন কেমন হবে তা তখনি দেখা যাবে। কিন্তু এই আসনে আওয়ামীলীগের শক্তিশালী একমাত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি স্বপন কেই আমি চ্যালেঞ্জ প্রার্থী মনে করছি বলে তিনি জানান।
তিনি চ্যানেল ফোর টিভিকে আরও জানান এমন একজন শক্তিশালী প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করতে হলে, আমি ছাড়া বিএনপি থেকে এই আসনে তেমন কোন শক্তিশালী প্রার্থী আমার নজরদৃষ্ঠিতে নেই। সর্বশেষে তিনি জানান ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী বিএনপির সাবেক এমপি গোলাম মোস্তফার চেয়েও বর্তমান তৃণমূল পর্যায় থেকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত ও সর্বাধিক জরিপেও আমি এগিয়ে আছি তাই আগামী জাতীয় নির্বাচনে এ আসনে কেন্দ্র আমাকে মনোনয়ন দিবেন বলে তিনি বলেন।
যা বর্তমানে জয়পুরহাট-২ আসনের তিনটি উপজেলায় প্রতিটি চায়ের স্টল, হোটেল, রেস্তোরা সহ বিভিন্ন জনবহুলে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে ঘিরে দিন দিন মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের প্রচারণার বিষয় টি সরগরম হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সহ অন্যান্য দল থেকে এবার কারা সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন তুলবেন, আবার কে বা কারা মনোনয়ন পাবেন তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
এদিকে বিভিন্ন উৎসব সহ আগামী পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সকল দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জনবহুল এলাকায় পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন লাগিয়ে, কেউবা ফেসবুক ও টুইটার এর মাধ্যমে, দোয়া ও শুভেচ্ছা বিনিময় ছাড়াও খুলি বৈঠক, কর্মী সভা, জনসভা সহ গনসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন এসবের দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছে এমপি স্বপন।
এর আগেও প্রকাশিত হলেও উল্লেখিত বিষয়টি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের চুরান্ত মনোনয়ন তালিকাধীন এই প্রার্থী বর্তমান এমপি আবু সাঈদ আল-মাহমুদ স্বপন ২০১৫ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের একক প্রার্থী হিসাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে তার নির্বাচনী এলাকাই ব্যাপক উন্নয়নমুখী কাজ করে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। ফলে তিনি বর্তমানে জয়পুরহাটে উন্নয়নের মাইলফলক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। উক্ত আসনটির ইতিহাস ও মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে থাকছেন ।
এ আসনে ১৯৯১ সাল থেকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অর্থাৎ পঞ্চম থেকে ১/১১ পরবর্তী নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত এ আসনটি বিএনপি’র দখলে ছিল। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চার দলীয় জোটের বিএনপি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা মহাজোটের প্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল-মাহমুদ স্বপনকে পরাজিত করেন।
আগামী একাদশ জাতীয সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এরই মধ্যে শুরু হয়েছে নির্বাচনী গুঞ্জন। জানা গেছে, বড় দলগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীন বিবাদ ও গ্রুপিং দিন দিন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। ফলে জয়পুরহাট-২ আসনে এবার আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জাপা’র একাধিক প্রার্থীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মহাজোটের একক প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল-মাহমুদ আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনেও শক্তিশালী প্রার্থী হিসবে ঘোষণা দিয়ে এলাকায় সভা-সমাবেশ, গণ সংযোগসহ গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
এছাড়া জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম সোলায়মান আলী, কালাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার বর্তমান মেয়র খন্দকার হালিমুল আলম জন এবং কালাই উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক, তৌফিকুল ইসলাম তালুদার বেলাল দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে কেন্দ্রে মনোনয়ন চাইবেন বলে তারা জানান তারা।
এদিকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপি’র সিনিয়ার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন সিরাজুল ইসলাম বিদ্যুৎ, কেন্দ্রীয় সাবেক নেতা, নূর মোহাম্মদ রুবেল, জেলার দুই সহ-সভাপতি যথাক্রমে ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রওনকুল ইসলাম টিপু চৌধুরী ও আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কমল, আক্কেলপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক,আরিফ আহমেদ রানা বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন বলে তারা জানান।
এ আসনে জামায়াত থেকে একটি প্রার্থী হিসেবে মাঠে দেখা যাচ্ছে আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদুর আলম সবুজ। এছাড়া জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশিদের মধ্যে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল কাশেম রিপন, জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি মুনছুর রহমান, জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি নূরুল্লাহ্ মাসুম ও কালাই উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এনামুল কবির কেন্দ্রের নিকট মনোনয়ন চাইবেন বলে তারা জানান।
আর এ আসনে আর কোন দলেরই নেতাকর্মীদের এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, আওয়ামী লীগের মধ্যে বিদ্যমান ২ গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি হলেও তা এখন দিন দিন প্রকাশ্য রূপ নিচ্ছে।
নির্বাচনের আর কয়েক মাস বাঁকি আছে যাতে এ গ্রুপিং বন্ধ না হলে নির্বাচনে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। দলীয় কোন্দলের বিষয়টি নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. সামছুল আলম দুদু এমপির সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, দলের শুধু প্রভাবশালীরাই নির্বাচন করবে আওয়ামীলীগের সভানেত্রীর শেখ হাসিনার আওতায় নেই তাই দলের তৃণমূল সহ যে কোন নেতাকর্মী মনোনয়ন চাইতেই পারেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটি যাকে মনোয়ন দিবে দলে থাকতে হলে সবাইকে মনোনীত প্রার্থীর পক্ষেই নির্বাচন করতে হবে বলে তিনি বলেন।
বিএনপির মধ্যেও রয়েছে অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব, যা নিরসন করা না গেলে আগামী নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কা করছেন মাঠ পর্যায়ের তৃণমূল নেতাকর্মীরা যে গ্রুপিং নিরসনের বিষয়েও লায়ন সিরাজুল ইসলাম বিদ্যুৎ জানান দ্রুতই বিএপির এই গ্রুপিংয়ের নিরসনও গঠবে।