ক্রমেই রাজধানীতে মারাত্মক আকার ধারণ করছে ডেঙ্গু
রাজধানীতে ক্রমেই মারাত্মক আকার ধারণ করছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নেয়া পদক্ষেপ, সিটি করপোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রম, কিংবা রোগ পরবর্তী উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা কোনো কিছুতেই যেন কমছে না এবারের ডেঙ্গুর প্রকোপ। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় না থাকার কারণেই চলতি মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বেড়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে সাধারণ মানুষের অসচেতনতাই এমন পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
ঢাকঢোল পিটিয়ে এমন আয়োজন, মশক নিধনে দুই সিটি করপোরেশনের নানা কর্মসূচি কিংবা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরিপ কোনো কিছুই যেন তোয়াক্কা করছে না এডিস মশা।
জুন থেকে শুরু এরপর থেকে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। জুনে আক্রান্তের সংখ্যা ২৬৬ আর মৃতের সংখ্যা ৩ জন, জুলাইয়ে আক্রান্ত ৮৬৪ আর মৃত ৪ আর আগস্টে এ পর্যন্ত ১০৫৪ জন আক্রান্ত হলেও মৃতের সংখ্যা ১ জন। যা গত বছর এসময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। হাসপাতালে যেমন বাড়ছে বহি:বিভাগে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা তেমনি বাড়ছে ভর্তি রোগীর সংখ্যা।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক অধ্যাপক উত্তম কুমার বলেন, 'গ্রুপ-এ যেগুলো আসে, হালকা জ্বর তাদের বাইরে থেকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেই, গ্রুপ-বি যারা আসে পেট ব্যথা, বমি হচ্ছে ইত্যাদি তাদের আমরা ভর্তি করাই। গ্রুপ-সি আরো মারাত্মক।'
চলতি বছর প্রাক মৌসুম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরিপে যে দশটি ওয়ার্ডকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় তিন মাস পর বর্ষা মৌসুমের জরিপে তার আশি শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ থেকে যায়। স্বাভাবিক ভাবেই বোঝা যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এসব জরিপ খুব একটা আমলে নেয়নি সিটি করপোরেশন। নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, 'নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে নিজেদের কাজটা ঠিকঠাকই করে যাচ্ছেন তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এম এম আকতারুজ্জামান বলেন, 'যৌথ উদ্যোগেই এটা হতে হবে। সিটি করপোরেশনই এটার সঠিক অথোরিটি।'
আর সিটি করপোরেশনও কথা বলছে নিজের গা-বাঁচিয়ে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ সালাউদ্দিন বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এটা ধ্বংস করেনি বা করেছে আমি জানিনা কিন্তু আমরা ফিজিক্যালি যে বাড়িতে পাওয়া গিয়েছে, সেখানে আবার গিয়েছি।'
এদিকে ডেঙ্গু রোগীর যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারি বেসরকারি দশটি হাসপাতালকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।