ভুয়া জন্ম সনদ আর জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানানোর চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা।
বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেতে নানা জালিয়াতিতে রোহিঙ্গারা ভুয়া জন্ম সনদ আর জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানানোর চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা। এতে পাসপোর্ট পেতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে স্থানীয়রা। কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার যোগসাজশে রোহিঙ্গারা অনুকূল পুলিশ রিপোর্টও পাচ্ছেন বলে মনে করেন পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। তবে পুলিশ বলছে, রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পেতে যারাই সহায়তা করবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
নতুন-পুরাতন মিলিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। নানা উপায়ে বিদেশ যেতে বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেতে মরিয়া এসব রোহিঙ্গারা। দালাল ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ভুয়া জন্ম সনদ আর জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে পাসপোর্টের আবেদন করছেন তারা। গেলো কয়েকমাসে কর্মকর্তাদের তৎপরতা ও ৬টি ধাপে যাচাই বাছাইয়ে কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে জব্দ করা হয়েছে কয়েকশ রোহিঙ্গার পাসপোর্টের আবেদন।
এদিকে রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয়দের পাসপোর্ট করতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। রয়েছে পুলিশি হয়রানির ও দীর্ঘসূত্রিতার অভিযোগ।
স্থানীয়রা বলেন, 'আগে জন্ম নিবন্ধনের খুব বেশি প্রয়োজন পড়তো না। কিন্তু রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে এগুলো প্রয়োজনীয়তা বেড়ে গেছে। চেয়ারম্যানের এনআইডি পর্যন্ত প্রয়োজন পড়ছে।'
যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পুলিশ সঠিক দায়িত্ব পালন করলে রোহিঙ্গাদের কোনভাবেই পাসপোর্ট পাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানালেন কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক আবু নাঈম। তিনি বলেন, 'জনপ্রতিনিধি এবং পুলিশ যদি সুষ্ঠুভাবে তাদের কাজ করে তাহলে রোহিঙ্গাদের পার্সপোট পাবার সম্ভাবনা থাকে না।'
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আফরুজুল হক টুটুল বলেন, 'রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পেতে যারাই সহায়তা করবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা অনেককে গ্রেফতার করেছি। অনেক পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে। রোহিঙ্গারা যাতে কোনোভাবে পাসপোর্ট না নিতে পারে সেই জন্য জিরো টলারেন্স গ্রহণ করেছি।'
কক্সবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত ৬ মাসে সন্দেহভাজন ৩ শতাধিক রোহিঙ্গার পাসপোর্ট ফরম জব্দ করার পাশাপাশি ১২ জনকে আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়া হয়েছে।