পরকীয়ার সূত্র ধরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাতভর রেখে ভোরে লিমুকে (১৮) শ্বাসরোধে হত্যা
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে পরকীয়া প্রেমের সূত্র ধরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাতভর রেখে ভোরে লিমা আক্তার লিমুকে (১৮) শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। দুই দিন দোকানের র্যাকের ভেতর লাশ লুকিয়ে রাখার পর তিন দিনের মাথায় রাতে কাপড়ের বস্তার ভেতর মোড়িয়ে ছাদ থেকে লাশ নিচে ফেলে দেয়া হয়। আর প্রেমিক স্বাভাবিকভাবে বসে ছিলেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। লাশ উদ্ধারের জন্য পুলিশকে খবর দেয়া হলে প্রেমিক খোকন পালিয়ে যায়।
সোমবার দুপুরে আদালতে এভাবেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় খোকন।
হত্যাকারী খোকন উপজেলার বাড়ৈখালী বাজারের চাঁন সুপার মার্কেটের দর্জিঘর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক। আর নিহত লিমা আক্তার লিমু (১৮) বাড়ৈখালী গ্রামের আ. মতিনের মেয়ে।
পুলিশ জানায়, ৬ মাস আগে লিমুর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে খোকনের সঙ্গে। গত ২৮ আগস্ট বিকালে লিমু খোকনের দোকানে যায়। লিমু সেখানে গিয়ে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। এ সময় খোকন প্রলোভন দেখিয়ে লিমুকে দোকানের ভেতর রেখে রাত্রিযাপন করে। খোকন ভোররাতে লিমুকে চলে যেতে বললে সে টাকা দাবি করে। টাকা না পেলে লিমু ঘটনা ফাঁস করে দেবে বলে জানায়।
কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে খোকন গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরোধ করে লিমুকে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ কাপড়ের র্যাকের বাক্সে লুকিয়ে রেখে ঠান্ডা মাথায় দোকানদারি করে। পরদিনও সারা দিন দোকানদারি করে রাত ১১টার দিকে লিমুর লাশ বস্তায় মোড়িয়ে মার্কেটের ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেয়। ৩১ আগস্ট দুপুরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে খোকন পালিয়ে যায়। পুলিশ ওই দিনই দোকানের র্যাকে রক্তের দাগ ও লাশ পঁচা গন্ধের সূত্র ধরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খোকনের দুই ভাই ও দুই কর্মচারীকে আটক করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) কাজী মাকসুদা লিমার নেতৃত্বে অভিযানে নামে পুলিশ। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে রোববার দিন দুই সন্তানের জনক খোকনকে টঙ্গী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাসুদুর রহমান জানান, খোকন আদালতে স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। নিখোঁজের ৪ দিনের মাথায় লাশ উদ্ধারের পর লিমুর বাবা বাদী হয়ে খোকনকে আসামি করে শ্রীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।