আজ বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের দ্বিতীয় দিন।
আজ বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের দ্বিতীয় দিন। ৪৭ বছর আগে ১৯৭১ সালের এ দিনে বাংলার দামাল ছেলেরা মাতৃভূমি বাংলাকে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর হাত থেকে উদ্ধার করতে প্রচণ্ড গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে।
মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষিপ্রতায় প্রতিদিন কোণঠাসা হতে থাকে পাকিস্তানি বাহিনী। নভেম্বরের শুরু থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের সংঘাত তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে।
সীমান্ত এলাকাগুলোতে সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করলে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় ভারতীয় মিত্রবাহিনী। এভাবেই দেশব্যপী যৌথবাহিনীর প্রতিরোধে নাস্তানাবুদ হতে থাকে পাকিস্তানি দখলদার সেনারা।
১৯৭১-এর ২ ডিসেম্বরের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা নিয়ে ওই সময় প্রকাশিত দ্য স্টেটসম্যানের একটি প্রতিবেদনে ওঠে আসে পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে যৌথবাহিনীর অগ্রযাত্রার কথা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রের চতুর্দশ খণ্ডে অন্তর্ভুক্ত হয় এ প্রতিবেদন।
এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের একের পর এক বীরত্বসূচক বিজয়ের কারণে সারা দেশ তখন বিজয়ের স্বপ্নে বিভোর। ডিসেম্বরের শুরুর দু’দিনে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিকামী বীর মুক্তিযোদ্ধারা বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। রামপুরা আর মালিবাগে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের ক্ষতিসাধন করতে সক্ষম হন।
১৯৭১-এর ২ ডিসেম্বর আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে। দেশজুড়ে গেরিলা আক্রমণে মুক্তিযোদ্ধারা শত্র“দের নাস্তানাবুদ করে পিছু হটতে বাধ্য করেছিলেন। এদিনে সীমান্ত-সংঘাত আরও তীব্র আকার ধারণ করে।
দিনাজপুরে পরাজয় বরণ করে পিছু হটেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। আর মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে ভারতীয় সেনাদল পঞ্চগড় মুক্ত করে। তারপর এগিয়ে যায় ঠাকুরগাঁওয়ের দিকে। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে হানাদারদের অবস্থানের ওপর গোলাবর্ষণ করা হয়েছিল।
মুহুর্মুহু আক্রমণে প্রাণভয়ে থরথর করে কেঁপে উঠেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে চলে টূড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে।
আজ আমরা স্বাধীন। স্বাধীনতার ৪৭ বছরে আমরা। যারা জীবন দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন, লড়েছেন এদেশের মুক্তির জন্য- আজ বিজয়ের এ মাসে আমরা তাদের স্মরণ করি। আমরা তাদের ভুলব না কোনো দিন।