সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে বেশিরভাগ স্কুলেই উন্নয়ন ফি'র নামে আদায় করা হচ্ছে বাড়তি টাকা।
রাজধানীর ধানমণ্ডিতে কাকলী হাই স্কুল এন্ড কলেজ। এমপিওভুক্ত এই স্কুলে শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাবদ প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ১৫ হাজার ৪০০ টাকা। যেখানে সরকারি নীতিমালায় স্পষ্ট বলা আছে -ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় এমপিওভুক্ত স্কুলগুলোর ক্ষেত্রে ভর্তি ফি নিতে পারবে ৫ হাজার টাকা। সেক্ষেত্রে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি'র বাইরে অতিরিক্ত প্রায় সাড়ে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা সরকার নির্ধারিত ফি'ই নিচ্ছেন। বাকি টাকা স্কুল উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচ বাবদ নেয়া হচ্ছে।
রাজধানীর বেশ কিছু স্কুল ঘুরে দেখা যায় একই অবস্থা। যাত্রাবাড়ি শাসুল হক খান স্কুল ১৪ হাজার ৪০০ ও খিলগাঁও ন্যাশনাল আইডিয়াল ১৭ থেকে ১৮ হাজার টাকা ভর্তি ফি নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সন্তানকে ভালো মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে এক প্রকার নিরুপায় হয়েই অভিভাবকরাও এ ভর্তি বাণিজ্যের জিম্মি হচ্ছেন।
একজন অভিভাবক বলেন, 'জানুয়ারির বেতন ছাড়াই ১৫ হাজার টাকা। প্রতিবাদ করলে পরে বাচ্চা থাকবে কি না তারই তো গ্যারান্টি নাই।'
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এ অসৎ বাণিজ্য বন্ধ করতে তৎপর রয়েছেন বলে জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের চেয়ারম্যান। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের চেয়ারম্যান মু. জিয়াউল হক বলেন, 'কোন মাধ্যমেই যদি আমাদের কাছে কোন অভিযোগ আসে আমরা তখনই তা খতিয়ে দেখি। কিন্তু সমস্যা হয়ে যাচ্ছে, অভিযোগ প্রমাণ করার জন্য যে কাগজপত্র দরকার তা অনেকাংশেই আমরা পাই না।'
সরকার নির্ধারিত রাজধানীতে ভর্তি ফি বাবদ এমপিও ভুক্ত স্কুল ৫ হাজার টাকা, অর্ধএমপিও ও নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফি' সহ বাংলা মাধ্যমে ৮ হাজার আর ইংরেজি মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করতে পারবে।
রাজধানীতে সরকারি ও বেসরকারিসহ মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪৫৯। দিনকে দিন এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই যে হারে বাণিজ্যিক হওয়া শুরু করেছে তাতে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা অর্থের বিনিময়ে ঠিক কতটা গুণগত শিক্ষা অর্জন করছে।