সিরাজগঞ্জে ধান ক্ষেতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ কৃষি কর্মচারীর ছুটি স্থগিত
সোহাগ হাসান
সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে মৌসূমী ইরি বোরো ধান ক্ষেতে ব্যাপকভাবে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে হাজার হাজার হেক্টর জমির ধান গাছের শীষ শুকিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ব্যপক হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। এ রোগ প্রতিরোধে জরুরী ব্যবস্থা ও লিফলেট বিতরণে সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি বিভাগের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর ছুটি স্থগিত করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) মো. হাবিবুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, জেলার ৯টি উপজেলায় এবার ১ লাখ ৪১ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি বোরো চাষাবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে এবার অনেক বেশি এই মৌসূমী ইরি বোরো ধানের চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা।
চলতি মাসের ৩য় সপ্তাহের ১ম থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে ধান গাছে এই রোগে আক্রমণ শুরু করে। এতে ধানের পাতা ও শীষ পুড়ে বা শুকিয়ে যাওয়া এ রোগটির নাম ব্লাস্ট রোগ। এ রোগে প্রথমে ধানের পাতা শুকিয়ে ও পুড়ে যেতে শুরু করে।
পরে ওই পাতাটি শীষের সংস্পর্শে এলে শীষও শুকিয়ে যায়। কৃষকদের অসচেতনতা ও সময়মতো বালাইনাশক ব্যবহার না করায় বেশ কিছু এলাকায় এই ব্লাস্ট রোগ দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বেশি ইউরিয়া প্রয়োগ, সকালে কুয়াশা ও দিনে গরমসহ রাতে ঠান্ডা জনিত কারণেও এ রোগের বিস্তার করতে পারে।
এ রোগের প্রভাব বিস্তার সবচেয়ে বেশি দেখা দিয়েছে, জেলার কারাখন্দ, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে। তবে আক্রান্ত এলাকায় সংশ্রিষ্ট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে রয়েছেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ মনিটরিং ও তদারকি করছেন।
এ পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে ৫২ হেক্টর ইরি বোরে ধানে এই পোকার আক্রমনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, কৃষি ঋণ, মহাজন ও দাদন ঋণ নিয়ে এবার এই মৌসূমী ইরি বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ ধরে এ রোগে আক্রান্ত এলাকার শত শত কৃষক হাতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন।
এ ব্লাস্ট রোগ আক্রমনে জেলায় প্রায় ২’শ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে দাবী করছেন তারা। এ রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত এলাকায় কৃষকদের পরামর্শ ও লিফলেট বিতরণসহ জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণে সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর ছুুটি স্থগিত করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।