৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করতে গিয়ে " ধর্ষণের মামলা নিতে ঘুষ নিল পুলিশ
৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করতে গিয়ে বাবার কাছ থেকে ঘুষ নিলেন রাজধানীর কাফরুল থানার এক দারোগা। এমনকি মামলার কাগজপত্র দিতেও টাকা দাবি করেছিলেন সেই পুলিশ সদস্য। সেই কথোপকথন ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলছেন, অভিযোগ ওঠার পরই টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। জড়িত পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীরা।
একজন মানবাধিকার কর্মীর সঙ্গে রাজধানীর কাফরুল থানার উপপরিদর্শক আব্দুল কুদ্দুসের কথোপকথনেই পরিস্কার হয় ঘুষ নেয়ার বিষয়টি।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের সঙ্গে এ বিষয়ে ফোনে কথা বলেন মানবাধিকার কর্মী আনোয়ার-ই-তাসলিমা। পাঠকদের জন্য ফোনালাপটি হুবহু তুলে দেয়া হলো:
- উনারা (ধর্ষণ চেষ্টার শিকার শিশুটির বাবা) মামলা করতে আপনার কাছে গেল, উনাদের কাছ থেকে ৪ হাজার টাকা কেন নিলেন?
- তাহলে মামলাটা আপনি চালান।
- আপনাকে তো সরকার বেতন দিচ্ছে..
- দিচ্ছে.. কিন্তু একটা মামলা চালাতে অনেক কিছু লাগে, এখানে যে পরিমাণ খরচ হয় সেটা কিভাবে ম্যানেজ হবে।
ধর্ষণ চেষ্টার সময় হাতে নাতে ধরা পড়ার আসামি সুমনের বিরুদ্ধে মামলা করতে গিয়ে এমন বিড়ম্বনায় পড়েন শিশুটির বাবা।
শিশুটির বাবা জানান, ৪ হাজার টাকা দেয়ার পর উনি বলেন, ৪ হাজার টাকায় হবে না, সকালে আসার সময় আরো ৩ হাজার টাকা নিয়ে আসতে হবে।
এ অভিযোগের পর কাফরুল থানায় গিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসকে পাওয়া যায়নি। টেলিফোনে থানার ওসি মো. সেলিমুজ্জামান জানান, ঘটনাটি আলোচিত হওয়ার পরই তাকে ক্লোজড করা হয়েছে। তদন্তও চলছে।
মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবীরা বলছেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র বিভাগীয় ব্যবস্থা নয়, আনতে হবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শামীম সরদার বলেন, এই অপরাধটা দণ্ডবিধিতে ঘুষ গ্রহণের অপরাধ। তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের এফআইআর হবে। সেটা সংশ্লিষ্ট থানাও করতে পারে, দুর্নীতি দমন কমিশনও করতে পারে।
মানবাধিকার কর্মী আনোয়ার-ই-তাসলিমা বলেন, অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে অন্যরাও সতর্ক হয়ে যাবে।
থানায় সাধারণ মানুষ সেবা পাচ্ছে কিনা এ বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে উধ্বর্তন পুলিশ কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।