নড়াইলে শিক্ষার্থীদের গুলি করে হত্যার হুমকিতে ৪ জনের নামে মামলা দায়ের
নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে পিস্তলের গুলিতে হত্যার হুমকির ঘটনায় চারজনের নামে মামলা দায়ের হয়েছে। সোমবার (১৭ জুন) দুপুরে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন ওই বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় পাসকৃত শিক্ষার্থী জাকারিয়া খান।
মামলায় আসামি করা হয়েছে-শহরের মহিষখোলার আবুল হোসেনের দুই ছেলে ঠিকাদার রেজাউল আলম (৪৬) ও কামরুল ইসলাম (৪০) এবং একই এলাকার ঠিকাদার মঈন উল্লাহ দুলু (৫০) ও দুঃখু। এছাড়া অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী শহরের ভওয়াখালী এলাকার জুলমত খানের ছেলে জাকারিয়া জানান, অভিভাবক কর্তৃক নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক প্রদেশ কুমার মল্লিক স্যারকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ও দোষীদের বিচার দাবিতে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গত রোববার (১৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে ডিসি অফিস চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী পালনকালে আসামিরা বেআইনী ভাবে জোটবদ্ধ হয়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয় তারা। আসামিদের এ ধরণের কর্মকান্ডে শিক্ষার্থীরা দিক-বিদিক দৌঁড়া-দৌঁড়ি শুরু করে। এছাড়া আসামিরা শিক্ষার্থীদের চড়-থাপ্প্ড় মারেন। এদিকে, ঘটনার সময় ১ নম্বর আসামি রেজাউল আলম মামলার বাদী তার (জাকারিয়া) কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। এ ব্যাপারে নড়াইল সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এছাড়া রেজাউল আলমের লাইসেন্সকৃত পিস্তলটি থানায় জমা নেয়া হয়েছে। মামলার ধারা-১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩০৭/৫০৬, পেনাল কোড-১৮৬০। এছাড়া ১৮৭৮ সালের আমর্স অ্যাক্ট এর ২১/২৩।
নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভূক্তভোগী শিক্ষক প্রদেশ মল্লিক জানান, গত ১৫ জুন সকালে তার বাসায় শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর সময় পড়ালেখা নিয়ে সানজিনা এরিনা নামে এক ছাত্রীকে শাসন করেন তিনি। এরিনা বিষয়টি বাড়িতে গিয়ে তার বাবা শহরের মহিষখোলার ঠিকদার মঈন উল্লাহ দুলুকে জানায়। এরপর ওই ছাত্রীর বাবা বাসায় এসে শিক্ষককে মারধর করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে অভিযুক্ত অভিভাবক মঈন উল্লাহ দুলু ভূক্তভোগী শিক্ষক প্রদেশ কুমারকে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ওই অভিভাবকের বিচার দাবিতে গত রোববার (১৬ জুন) সকাল ১০টার দিকে বিদ্যালয়ের সামনে নড়াইল-যশোর সড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধসহ ডিসি অফিস চত্বরে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে। এ সময় ডিসি অফিস চত্বরে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের ওপর হঠাৎ করে চড়াও হয় অভিযুক্ত অভিভাবক ঠিকাদার মঈন উল্লাহ দুলুর লোকজন। দুলুর পক্ষ নিয়ে একই এলাকার ঠিকাদার রেজাউল আলমসহ তার অনুসারীরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের তাড়া করে মারধরে উদ্যত হন। এক পর্যায়ে প্রশাসনের সামনেই রেজাউল আলম পিস্তল বের করে ছাত্রদের গুলি করার জন্য এগিয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে ঠিকদার রেজাউল আলম সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাননি।