বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর অবৈধ হলে আওয়ামী লীগও অবৈধ, প্রধানমন্ত্রীও অবৈধ : রিজভী
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকার সময়েই বাকশাল থেকে আওয়ামী লীগ পুনঃজন্ম নিয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত হয়ে বাকশাল হয়েছিল। তখন পলিটিক্যাল পার্টি রেজ্যুলেশন হয়েছিল। সেই অনুযায়ী আওয়ামী লীগের একজন নেতা দরখাস্ত করে বাকশালকে আওয়ামী লীগে ফিরিয়ে এনেছিলেন। সেটা জিয়াউর রহমানের সময়। তার আইনে আওয়ামী লীগ বাকশাল থেকে আবার আওয়ামী লীগ হিসেবে পুনঃজন্ম পেয়েছে। আওয়ামী লীগের নতুন জন্ম দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি অবৈধ রাষ্ট্রপতি হলে আওয়ামী লীগও অবৈধ, আজকের প্রধানমন্ত্রীও অবৈধ।
সোমবার ( ৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী আরও বলেন, তার (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) কোনো জবাবদিহিতা নেই। তিনি নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নন। তাকে জিততে হয় রাতের ভোটে, দিনের আলোর ভোটে নয়। সে কারণেই তিনি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আবোল-তাবোল কথা বলেন।
গণতন্ত্র যারা হত্যা করে তারা কি বৈধ? যারা বাকশাল করে তারা কি বৈধ? যারা সংবাদপত্র হত্যা করে, তারা কি বৈধ? যারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হত্যা করে, তারা কি বৈধ?— প্রশ্ন রাখেন রিজভী। বলেন, জিয়াউর রহমান বৈধতা, গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের প্রতীক, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রতীক। তাই ডাকাতরা, হত্যাকারীরা ভালো মানুষকে অবৈধ বলবেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় জোর করে থেকে এখন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আবোল-তাবোল বলছে। জিয়াউর রহমান অবৈধ প্রেসিডেন্ট ছিলেন না, তিনি বৈধ প্রেসিডেন্ট ছিলেন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আজকে যাদের জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হয় না, তারাই এসব কথা বলে।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, আজ এই অবৈধ সরকার একটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। এ ধরনের মামলায় যেখানে যে কেউ সাজাপ্রাপ্ত হলে হাইকোর্টে সাত দিনে জামিন হয়ে যায়, সেখানে এই ফ্যাসিবাদী সরকার তাকে দেড় বছরের বেশি সময় আটকে রেখেছ। তাই আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া উচিত, গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হলে গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
খন্দকার মোশাররফ আরও বলেন, আমরা দেখেছি গতকাল কোনো কারণ ছাড়াই সংসদে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে। তাদের কথা, জিয়াউর রহমান নাকি অবৈধ। ১৯৭৮ সালের জুন মাসে সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে এ দেশের জনগণ ভোট দিয়ে জিয়াউর রহমানকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছিল, তিনি আওয়ামী লীগের মতো ভোটের আগে রাতে ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আসেননি। জনগণের ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আসার কারণেই এই সরকার অন্যদের ওপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের দোষ ঢাকতে চায়।
তিনি আরও বলেন, বাকশাল করে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা করেছে। আর জিয়াউর রহমান বাকশালের পরিবর্তে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। আবার স্বৈরাচার এরশাদের হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে এই দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন খালেদা জিয়া। তাই আওয়ামী লীগের রেকর্ড হচ্ছে গণতন্ত্র হত্যার, আর বিএনপির রেকর্ড গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার।
অনুষ্ঠানে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র সহসভাপতি নূর জাহান ইয়াসমিনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।