খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে চিকিৎসকদের অবাধ ও নিরপেক্ষ প্রতিবেদন দাখিল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপি
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে চিকিৎসকদের অবাধ ও নিরপেক্ষ প্রতিবেদন দাখিল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, সরকারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) যখন বলেন যে, সব ঠিক আছে, তিনি (খালেদা জিয়া) সুস্থ আছেন, রাজার হালতে আছেন; তখন বিএসএমএমইউর উপাচার্য ও ডাক্তারদের ঘাড়ে কয়টা মাথা আছে যে, বলবেন তিনি (খালেদা) খারাপ আছেন।
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আবদুস সালাম হলে ‘৯০-এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য আয়োজিত খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তারেক রহমানের সাজা বাতিল এবং স্বৈরাচার পতন দিবস উপলক্ষে এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কালকে সরকার আদালত অবমাননা করেছে। বিএসএমএমইউর উপাচার্য আদালত অবমাননা করেছেন। কারণ আদালত ৫ তারিখের মধ্যে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন চেয়েছিলেন। কোর্ট আদেশ দিয়েছিলেন যে, এই রিপোর্ট ডাক্তারদের স্বাক্ষরসহ হাজির করতে হবে। কিন্তু তারা করেননি। তার আগের দিন প্রধানমন্ত্রী বললেন— ‘খুব ভালো আছেন, সুস্থ আছেন।’ এমন বক্তব্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করে অবমাননা করেছেন।
বিচার বিভাগ খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে চাপে আছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশে বিচার বিভাগের যে অবস্থা, সেখানে কে কতটা সাহস রাখবেন, তা আমি জানি না।
খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেলের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল সবসময় সরকারের স্বার্থরক্ষার জন্য চেষ্টা করেন। এমনভাবে চেষ্টা করেন যে, সরকারের না হয় দলের স্বার্থরক্ষার জন্য চেষ্টা করেন। এতকিছুর পরও আমরা হতাশ হয়েছি, সুপ্রিমকোর্টের বিচার বিভাগ এ বিষয়টিকে লক্ষ্য করেনি। এই বিষয়ে আদালত অবমাননার ব্যবস্থা নেয়নি।’
আওয়ামী লীগ কখনই গণতন্ত্র চায়নি মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুর্ভাগ্য আজকের জাতি ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছে। তার মূল বিষয়বস্তু ছিল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। আজকের সরকার গণতন্ত্র গলাটিপে মেরে ফেলেছে।
প্রধান বিচারপতির লেখা বই থেকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, দেশে ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শেষ হয়ে যাচ্ছে। সিনহা সাহেব তার বইতে বলে গিয়েছিলেন, আমাদের যা কিছু অর্জন, তা দানবের মতো সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে। আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব গণতন্ত্র সব ধ্বংস।’
অসুস্থতায় খালেদা জিয়া মারা যেতে পারেন– এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। ডাক্তাররা বলছেন, বিলম্ব হলে তাকে সুস্থ অবস্থায় আর পাওয়া যাবে না। এমনকি প্রাণহানিও হতে পারে। আমরা বলছি, সবকিছু বাদ দেন। অন্তত মানবিক কারণে তাকে মুক্তি দিয়ে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন।
আলোচনাসভায় ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সাবেক ছাত্রনেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ডাকসুর সাবেক এজিএস নাজিম উদ্দিন আলম প্রমুখ বক্তৃতা করেন।