চট্টগ্রামে বিপিএলের খেলাগুলোতেচলছে কোটি টাকার জুয়া
চট্টগ্রামে বিপিএলের খেলাগুলোতে মাঠে দর্শকের উপস্থিতি থাকুক বা নাই থাকুক, প্রতিদিনই নগরীতে চলছে কোটি টাকার জুয়া। চার-ছক্কার এ খেলাকে ঘিরে সক্রিয় রয়েছে দেশি-বিদেশি জুয়াড়িরা। প্রযুক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে সংঘবদ্ধ একটি চক্র কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছে বলে মত প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের। আর বাজি ধরতে গিয়ে যেমন নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে তেমনি ঘটছে আত্মহননের ঘটনাও।তবে জুয়া বন্ধে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিতে চাইলেও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না।
চট্টগ্রামে বিপিএল নিয়ে উন্মাদনার পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে ছড়িয়ে পড়ছে জুয়াও। চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি ছিটানো রঙিন এই ক্রিকেট উৎসবকে ঘিরে সক্রিয় জুয়াড়িরা। মহানগরীর অলিগলি থেকে শুরু করে সব জায়গায় জুয়ার হিসাব নিকাশ। নগরীর হাজারী গলি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের এলাকা হিসেবে পরিচিত। প্রতিদিন বিপিএল-এ শুধু এই জায়গা থেকে খেলা হয় কোটি টাকার জুয়া। এছাড়া বাকলিয়া, আগ্রাবাদ, হালিশহর, পতেঙ্গাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকার ও তরুণ প্রজন্ম প্রতিনিয়ত জড়িয়ে পড়ছে এই জুয়ার আসক্তিতে। বাজিতে হেরে যেমন নিঃস্ব হয়েছে অনেকে, তেমনি ঘটেছে প্রাণহানির ঘটনাও।
চট্টগ্রামের কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী বলেন, এখানে কোটি কোটি টাকার বাজি হয়। প্রতিটি দোকানদারের সাথে কেউ না জড়িত থাকে। নতুন নতুন প্রজন্মরাও এর সাথে অংশগ্রহণ করছে।
সাবেক জাতীয় দলের খেলোয়াড় আফতাব আহমেদ বলেন, তরুণ প্রজন্ম খেলা বাদ জুয়ায় আসক্ত হচ্ছেন। এটা আমাদের দেশের জন্য খুব একটা ভালো লক্ষণ না। ন্যাশনাল লিগেও জুয়া খেলা চলে।
অভিযোগ রয়েছে, বেশির ভাগ জুয়াড়ি বিপিএলে বাজি ধরছে বেট ৩৬৫ সফটওয়্যার ব্যবহার করে। এছাড়া ম্যাচের পাওয়ার প্লেতে কতো রান হবে, ৫ বা ১০ ওভারে রান কতো হবে, কোন বলে উইকেট যাবে এসব নিয়ে হাজার থেকে লাখ টাকার বাজি ধরছে জুয়াড়িরা। আর সংঘবদ্ধ একটি চক্রের মাধ্যমে দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মনে করেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ রাজীব দাশ বলেন, জুয়ার এই টাকাগুলো হুন্ডির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইন্ডিয়ায় চলে যায়। বিশেষ করে সিঙ্গাপুরে বেশি যায়।
যারা এই ধরনের জুয়ার সাথে জড়িত থাকবে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সিএমপি উপ-পুলিশ কমিশনার মেহেদী হাসান বলেন, প্রত্যেকটা জায়গা আমরা কঠোর নজরদারিতে রয়েছে। সাইবার ক্রাইম ইউনিট এটা নিয়ে কাজ করছে।
এছাড়া গত কয়েক বছরে বিপিএল চলাকালীন বিভিন্ন দেশের জুয়াড়িদের আনাগোনা বেড়ে যায় চট্টগ্রামে। বিভিন্ন সময় পুলিশের হাতে আটকও হয়েছিল বেশ কয়েকজন ভারতীয় জুয়াড়ি।