উত্তেজনার বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে
ইরাকের বাগদাদ বিমানবন্দরের কাছে মার্কিন হামলায় নিহত হন ইরানি শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল কাসেম সোলাইমানি। উত্তেজনার বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়ে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে।
এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিশোধ নিতে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। আবারো হামলার ক্ষেত্র সেই ইরাক। প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না হলেও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের হামলা-পাল্টা হামলার কারণে ক্ষুব্ধ সাধারণ ইরাকিরা।
মার্কিন আগ্রাসন, আইএস জঙ্গীদের উত্থানসহ নানা প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করে যখন সাধারণ ইরাকিরা কিছুটা স্বাভাবিক হচ্ছিল, ঠিক তখন সোলাইমানি হত্যাকাণ্ড নিয়ে রক্তাক্ত ইরাকের মাটি।
এতে আবারো উৎকণ্ঠিত ইরাকিরা। তাদের আশঙ্কা ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র- উভয় দেশেরই রোষাণলের শিকার হবে ইরাক। যা আবারো তাদের অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেবে।
ইরাকিরা বলছে, দুই দেশই যুদ্ধ চায়, অশান্তি চায়। কিন্তু আমরা চাই শান্তি। আমরা একটি সবল অর্থনীতির ইরাক দেখতে চাই। আমরা আমাদের দেশকে আবারো গড়ে তুলতে চাই।
জেনারেল সোলাইমানিকে হত্যার পর নিজেদের মাটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে প্রস্তাব পাস করে ইরাকি পার্লামেন্ট। এরপরই বছরের পর বছর ধরে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহৃত ইরাকের ওপর নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এতে মার্কিন আগ্রাসনে বিধ্বস্ত দেশটির মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
তারা বলছে, আমরা চাই ইরাক স্বাধীনভাবে থাকুক। কখনোই চাই না এখানে অন্য কোন দেশের সেনা অবস্থান করুক কিংবা আমাদের সিদ্ধান্তের ওপর হস্তক্ষেপ করুক।
তবে অনেকের ধারণা আবার ভিন্ন। তাদের আশঙ্কা মার্কিন সেনারা ইরাক ছাড়লে চরমভাবে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নেতিবাচক সম্পর্ক নিয়েও চিন্তিত তারা।
তারা বলছে, কে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে? আমরা কি এখনো মার্কিন সেনাদের বিকল্প তৈরী করতে পেরেছি? তারা ইরাক ছাড়লে তো আমাদের মৃত্যুবরণ করতে হবে।
সাধারণ মানুষের মতো দ্বিধা-বিভক্ত দেশটির আইনপ্রণেতারাও। পার্লামেন্টে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার প্রশ্নে ভোটে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। এর মাধ্যমে দেশটি আবারো রাজনৈতিক সঙ্কটে পড়বে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। তবে ভিনদেশী রাজনৈতিক সঙ্কট ইরাকি প্রশাসন কিভাবে সামাল দেয় তা দেখার অপেক্ষায় দেশটির সাধারণ মানুষ।